যত্রতত্র: এমন ভাবেই পড়ে থাকে ইমারতি দ্রব্য। নিজস্ব চিত্র
ইমারতি দ্রব্য রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে সর্বত্র। ইতিমধ্যে গত কয়েক মাসে বাদুড়িয়ায় অন্তত কুড়িটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গিয়েছেন দু’জন। তবু প্রশাসনের হুঁশ ফেরেনি বলে অভিযোগ।
দিন কয়েক আগেও রাস্তার পাশে পড়ে থাকা গাছের গুঁড়িতে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় এক স্কুল ছাত্রী। পায়ের উপর দিয়ে ট্রাক চলে যায়। পা বাদ গিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, এত কিছুর পরেও রাস্তা দিয়ে ইমারতি দ্রব্য সরানো হচ্ছে না। যাঁরা এ সব জিনিসপত্র রাখেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাও নেওয়া হয় না।
বসিরহাট মহকুমার খোলাপোতা-মছলন্দপুরের মধ্যে বাদুড়িয়া চৌমাথার মোড় থেকে একটি রাস্তা টাকি রাস্তার সঙ্গে মিশেছে। ওই পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে থাকে ইমারতি দ্রব্য। মাটিয়া, শ্রীনগর, ধান্যকুড়িয়া, জগন্নাথপুর এবং রঘুনাথপুর পঞ্চায়েত। সেখানেও ওই একই অবস্থা। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ।
রাস্তার উপরে অনেককে ইমারতি দ্রব্য মেশানোর কাজও করতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালির উপর দিয়ে যেতে গিয়ে সাইকেল, বাইক উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। আঘাত পাচ্ছেন পথচারী। ওয়াহাব গাজি, রতন পালিত, কমল পাল, কমলিকা খাতুন, সেরিনা খাতুনদের কথায়, ‘‘ব্লক দফতর থেকে শুরু করে থানা, পঞ্চায়েত, পুরসভা-সহ সরকারি ও বেসরকারি দফতরে যাওয়ার জন্য রাস্তাটি এলাকার মানুষের কাছে জরুরি। রাস্তার উপরে ছড়িয়ে থাকা বালি-পাথরে সাইকেল, বাইক সহ ছোট গাড়ির চাকা পিছলে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ হাত-পা ভাঙছে। প্রশাসনের হেলদোল নেই।’’
বাদুড়িয়া-মাটিয়া রাস্তার মধ্যে পড়ে মাটিয়া পাইকারি মাছ বাজার। আড়বালিয়ায় রয়েছে বাজার। দোকান আছে বৈকারা গ্রামের মোড়ে। আড়বালিয়া হাইস্কুল, গোটা তিনেক প্রাথমিক স্কুলে যেতে হলে পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে রাস্তাটি অত্যন্ত জরুরি। মাটিয়া, বাদুড়িয়া, আরসুলা, বৈকাড়া, আড়বালিয়া-সহ দু’টি থানা এলাকার মধ্যে থাকা একটি পুরসভা এবং চারটি পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার মানুষের কাছে রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাদুড়িয়ার বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলু বলেন, ‘‘বাদুড়িয়া-মাটিয়ার মধ্যে নতুন রাস্তাটির উপরে যে ভাবে বালি, পাথর, ইট রাখা হচ্ছে তা ঠিক নয়। অবিলম্বে এ সব পরিষ্কার করা প্রয়োজন। ঘর তৈরির জন্য কেউ কেউ রাস্তার উপরে ইমারতি মালপত্র ফেলে রেখেছেন বলে শুনেছি। দ্রুত ওই সব সরিয়ে নেওয়ার জন্য বাসিন্দাদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’ পুলিশকেও এ বিষয়ে নজর দিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান তুষার সিংহ বলেন, ‘‘যাঁরা রাস্তা আটকে সরঞ্জাম রাখছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা একাধিকবার বলা সত্ত্বেও পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করছে না।’’ রাস্তা পরিষ্কার রাখার জন্য পুরসভার তরফে মাইকে প্রচার করা হয় বলে জানান পুরপ্রধান।
পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি প্রকল্পে ঘর তৈরি করা হচ্ছে। যে সমস্ত ঠিকাদার এই কাজ করছেন, তাঁরাই রাস্তার উপরে সরঞ্জাম ফেলে রেখে কাজ করছেন। তাঁদের দ্রুত সেগুলি সরানোর জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও কথাই শুনছেন না তাঁরা। এ বার ওই সমস্ত জায়গায় রাখে মালপত্র বাজেয়াপ্ত করা হবে জানানো হয়েছে।