এই ধরনের ভুটভুটিতেই চলে বালি পাচার। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায় রমরমিয়ে চলছে সাদা বালির কারবার। বিভিন্ন নদীচর ও সমুদ্র সৈকত থেকে বেআইনি ভাবে সাদা বালি তুলে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
বেআইনি বালি কাটা রুখতে নামখানা ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক ও কাকদ্বীপ থানার পুলিশ গত শনিবার নামখানার নাদাভাঙা এলাকায় অভিযান চালায়। সেখানে পৌঁছে প্রশাসনের লোকজন দেখেন, বালি ভর্তি নৌকা থেকে কিছু শ্রমিক বালি নিয়ে রাস্তার পাশে জমা করছেন। কয়েক জনকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে নামখানা ব্লকের ভূমি ও ভমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালাই। বালি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বোট মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।” তিনি জানান, আটক শ্রমিকদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল। কিন্তু ব্লক ভূমি দফতর কোনও অভিযোগ না করায় আমরা কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি।”
স্থানীয় বিজেপি নেতা অনুপ সামন্তের অভিযোগ, বালি চুরি দীর্ঘ দিন ধরে চলছে। তা জেনেও প্রশাসন চুপ। প্রশাসন বালি চোরদের ধরলেও তৃণমূলের নির্দেশে কাউকে গ্রেফতার করেনি।” বিরোধীদের দাবি, নামখানা ও কাকদ্বীপ ব্লকের বিভিন্ন নদী ও সমুদ্রে চর থেকে বালি কেটে ফুলেফেঁপে উঠছে কিছু ব্যবসায়ী। পুলিশি অভিযান হলে খানিকটা চুপচাপ থাকে সব। পরে আবার এক পরিস্থিতি। প্রশাসনের সঙ্গে বালি মাফিয়াদের যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, কাকদ্বীপ মহকুমায় সরকারি অনুমতিপ্রাপ্ত একটি মাত্র বালি ঘাট কাকদ্বীপ লট ৮। কিন্তু মুড়িগঙ্গা নদী লাগোয়া ময়নাপাড়া, বুদ্ধপুর, নাদাভাঙা-সহ বেশ কিছু এলাকায় রমরমিয়ে চলে বালি কারবার। দিনের বেলায় মাঝে মধ্যে মুড়িগঙ্গার মাঝে চর পড়ে যাওয়া জায়গা থেকেও বালি কাটতে দেখা যায়।
পুলিশ জানিয়েছে বালি কাটার বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযান চলে। গ্রেফতারও করা হয়। গত বছর কাকদ্বীপ লট ৮ লাগোয়া মুড়িগঙ্গা নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি কাটার অভিযোগে পুলিশ ছ’জনকে গ্রেফতার করেছিল।
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অভিষেক দাস বলেন, “প্রশাসন বালি চুরি ধরেছে এবং জরিমানাও করেছে শুনলাম। পরবর্তী পদক্ষেপ প্রশাসন নিশ্চয়ই করবে। অবৈধ বালি চুরি আমরা কখনওই সমর্থন করি না।”