সম্প্রীতি: মসজিদের পাশেই তৈরি হচ্ছে পুজোর মণ্ডপ। ছবি: সুজিত দুয়ারি
ছোট মাঠটির একদিকে রয়েছে একশো বছরেরও বেশি প্রাচীন একটি মসজিদ। তার সামনেই তৈরি হচ্ছে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। পুজোর আয়োজনে শামিল হয়েছেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষই। ইদের সময় ওই মাঠেই মুসলিম ধর্মের মানুষেরা নমাজ পড়েন। গোবরডাঙা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গড়পাড়ায় বহু বছর ধরে এ ভাবেই সম্প্রীতির ইদ ও দুর্গাপুজো দেখে আসছেন মানুষ।
মসজিদের পাশেই রয়েছে গড়পাড়া ইয়ংস্টার ক্লাব ঘর। ক্লাবের পরিচালনায় ওই মাঠে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। ক্লাবের সম্পাদক মলয় চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের পুজো এ বার ৫২ বছরে পড়ল। ইদে যেমন আমরা সহযোগিতা করি, তেমনই দুর্গাপুজোর আয়োজনেও সকলেই শামিল হই। সাহেব মণ্ডল, ইসমাইল গাজি, হাফিজুর মণ্ডলেরা সক্রিয় ভাবে পুজোর কাজে অংশ নেন।’’
গড়পাড়া মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর বলেন, ‘‘এই মাঠে ইদের নমাজ পড়ি, নবি দিবস পালন করি, ধর্মীয় সভা করি। সমস্ত ক্ষেত্রেই হিন্দু পড়শিরা সাহায্য করেন। তেমনই পুজোয় আমরা সহযোগিতা করি।’’
তিনি জানান, ১৯৬৪ সালে দাঙ্গার সময় অনেক মুসলিম পরিবার এখান থেকে চলে গিয়েছিলেন। মসজিদটিও দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। পরবর্তী সময়ে মসজিদ সংস্কারের জন্য এগিয়ে আসেন হিন্দু-মুসলিম সকলেই। অতীতে একবার মসজিদের জমি জবরদখলের চেষ্টা চলেছিল। এলাকার সকলে প্রতিবাদ জানিয়ে তা রোধ করেন। তিনি বলেন, ‘‘দেশের মানুষের কাছে আবেদন, এখানে এসে দেখে যান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন কাকে বলে।’’
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বহু বছর ধরেই এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে ইদ ও পুজো পালন হয়ে আসছে। যে বছরগুলোতে দুর্গা পুজোর ঠিক আগেই ইদ পড়ে, সেই সময় ইদের জন্য মণ্ডপ তৈরির কাজও সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। ইদ মিটে গেলে ফের কাজ শুরু হয়।’’
গোবরডাঙার পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘সম্প্রীতির এমন ছবি বহু বছর ধরে আমরা দেখে আসছি। দীর্ঘদিন ধরেই দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এক অপরের বিপদে এগিয়ে আসেন। উৎসবে যোগ দেন।’’