ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং ভরা কটালের জোড়া ধাক্কায় দুই ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকায় আনাজ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাঁধ ভেঙে বা নদী উপচে নোনা জল ঢুকেছে কৃষি খেতে। হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল এখনও জলের তলায়। ফলে, দুই জেলায় অনেকটাই বেড়েছে আনাজের দাম।
অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ডায়মন্ড হারবারে আনাজের দাম এক লাফে দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজারে ঝিঙে ৫০, উচ্ছে ৬০, পটল ৫০ বেগুন ৮০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে। দুর্যোগের আগে এই সব আনাজের দাম প্রায় অর্ধেক ছিল। বিক্রেতাদের দাবি, ইয়াসের জেরে খেত নষ্ট হয়েছে। আনাজের জোগান কমেছে। ফলে, দাম বেড়েছে।
ক্যানিং বাজারে এখন কেজিপ্রতি ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, আলু ১৪ টাকা, টোম্যাটো ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, ইয়াসের পরে আনাজের দাম কেজি প্রতি গড়ে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে।
ভাঙড়ের চাষিদের একাংশ জানাচ্ছেন, সেখানে আনাজ চাষের ক্ষতি খুব একটা হয়নি। উল্টে রুক্ষ জমিতে সতেজ হয়েছে বেগুন,লঙ্কা, পটল, ঝিঙে, উচ্ছে, ভেন্ডি, বরবটি ও পেঁপে। ফলে, ভাল দাম পাচ্ছেন সেখানকার চাষিরা।
ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার, পোলেরহাট, শোনপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় খুচরা বাজারে কেজি প্রতি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দামে। পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, লঙ্কা ৫০ টাকা, উচ্ছে ৫০ টাকা প্রতিকেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ইয়াসের আগে ওই সব আনাজের দাম প্রতিকেজিতে ১০-১৫ টাকা কম ছিল।
উত্তর ২৪ পরগনায় সব থেকে বেশি আনাজ চাষের ক্ষতি হয়েছে বসিরহাট মহকুমায়।
বসিরহাট শহরে ইয়াসের আগে বেগুনের দাম ছিল ৩০ টাকা প্রতিকেজি। এখন বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। পটল ও ঢ্যাঁড়শের দাম ২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা। একমাত্র কাঁচা লঙ্কার দাম কমেছে। ইয়াসের আগে দাম ছিল ১০০ টাকা কেজি। এখন হয়েছে ৫০
টাকা।
বিক্রেতারা জানালেন, নোনা জল ঢুকে লঙ্কা চাষে ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা জলমগ্ন খেত থেকে লঙ্কা তুলে বিক্রি করছেন। ফলে, লঙ্কার জোগান বেড়ে গিয়েছে। তাই, কমেছে দাম।
হাসনাবাদে পটল, ঢেঁড়শ, উচ্ছে, ঝিঙে-সহ সব আনাজেরই দাম বেড়েছে।
বসিরহাটের ওয়াব গাজি বলেন, ‘‘দাম শুনে আনাজে হাত দেওয়াই যাচ্ছে না।’’
বনগাঁ মহকুমায় আনাজ চাষে তেমন ক্ষতি হয়নি। এখানে পটল, উচ্ছে, ঢেঁড়শ, ঝিঙে-সহ বেশিরভাগ আনাজের দাম কমেছে।
ইয়াসের আগে পটলের দাম ছিল ৪০ টাকা প্রতিকেজি। এখন হয়েছে ৩০ টাকা। উচ্ছে ৪০ টাকা থেকে কমে ৩০ টাকা হয়েছে।
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এমনিতেই মহকুমায় আনাজ চাষ বেশি হয়।
চাষে ইয়াসের প্রভাব তেমন একটা পড়েনি হয়নি। করোনা-পরিস্থিতির কারণে বাইরে আনাজ যাওয়া বন্ধ। ফলে, জোগান বেশি হওয়ায় দাম কমেছে।