অভিযুক্ত তৃণমূলের একাংশ
Working Committee

কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির ইস্তফা ক্যানিংেয়

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় তৃণমূলের মদতপুষ্ট বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে নানা রকম গন্ডগোল  পাকিয়েছে।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০০:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলেজ পরিচালন সমিতির একাংশের অসহযোগিতায় কলেজের উন্নয়ন বিঘ্নিত হওয়ার কারণ দেখিয়ে পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি সন্তু চক্রবর্তী। শিক্ষামন্ত্রীকে পাঠানোর জন্য তিনি পদত্যাগপত্র কলেজের অধ্যক্ষের কাছে জমা দেন।

Advertisement

ক্যানিংয়ের এই কলেজটির নামডাক আছে। দেশের ১২৪টি কলেজ ২০১৫ সালে নাকের স্বীকৃতি লাভ করে। তার মধ্যে বঙ্কিম সর্দার কলেজও আছে। কলেজ সূত্রের খবর, উন্নয়ন খাতে ইউজিসি-র দেওয়া টাকা খরচের ক্ষেত্রে পরিচালন সমিতির একাংশ এবং তৃণমূলের একাংশ নানা ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছিল। কলেজে রং করার ক্ষেত্রে বিনা টেন্ডারে তাদের লোকজনকে দিয়ে কাজ করানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করার ক্ষেত্রে অনড় থাকায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয়। আরও নানা কিছু নিয়ে মতানৈক্য শুরু হয় পরিচালন সমিতির একাংশ ও তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় তৃণমূলের মদতপুষ্ট বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে নানা রকম গন্ডগোল পাকিয়েছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি কলেজের অনুষ্ঠানে একদল পড়ুয়া বিক্ষোভ দেখিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। সে সময়ে তারা নানা দাবি-দাওয়ার কথা বলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের দাবি মতো তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানের কথা মেনে নেয়। সেই মতো ১৮ ফেব্রুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পরিচালন সমিতি বৈঠকে বসে। অভিযোগ, ওই বৈঠকে ছাত্রদের একাংশ উপস্থিত থাকলেও ক্যানিং ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শৈবাল লাহিড়ি গোষ্ঠীর ছাত্র সংসদের ছাত্রেরা অনুপস্থিত ছিলেন। ওই দিন ব্লক সভাপতির অনুগামী বহিরাগত ছাত্রদের একাংশ কলেজের অধ্যক্ষ সহ দুই শিক্ষিকাকে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

বুধবার দুপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পরিচালন সমিতি বৈঠক ডাকে। সেই বৈঠকেও শৈবাল-গোষ্ঠীর সদস্যেরা অনুপস্থিত ছিলেন। যে কারণে ক্ষুব্ধ হন পরিচালন সমিতির সভাপতি। তিনি ওই বৈঠক থেকে বেরিয়ে গিয়ে অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র দেন।

সন্তু বলেন, ‘‘কলেজ পরিচালন সমিতির বেশ কিছু সদস্য সহযোগিতা না করায় কলেজের উন্নয়ন করতে পারছিলাম না। যদি কলেজের উন্নয়ন করতে না পারি, তা হলে ওই পদে থেকে লাভ নেই। সে কারণেই সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলাম।’’ অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পদত্যাগপত্র শিক্ষামন্ত্রী দফতরে পাঠিয়ে দেব। সভাপতি পদত্যাগ করায় কলেজের কাজ নানা ভাবে ব্যাহত হবে।’’ নাকের স্বীকৃতি হাতছাড়া হতে পারে বলেও অধ্যক্ষের আশঙ্কা।

এ দিকে, ব্লক সভাপতির অনুগামী ছাত্রদের একাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এবং নানা অনিয়মের কথা বলে ‘আর নয় অন্যায়’ লিফলেট ছাপিয়ে এলাকায় বিলি করা শুরু করেছে। শৈবাল বলেন, ‘‘কে কী বলছেন, আমি জানি না। আমি শুনেছি ছাত্রেরা বেশ কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিলেন। তাতে কলেজের কোনও কাজে বিঘ্ন ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। বিভিন্ন দাবি নিয়ে ছাত্রেরা হ্যান্ডবিল প্রকাশ করেছিলেন। অধ্যক্ষ তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি আলোচনায় বসেননি বলে জেনেছি।’’ শৈবাল আরও বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ তাঁদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেননি। সুন্দরবন এলাকার মধ্যে ওই কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ। কলেজের মধ্যে অন্য কী বিচ্ছিন্ন ঘটনা আছে, তা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলুষিত হোক তা আমি চাই না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement