বিক্ষোভ: বনগাঁয় বিজেপির লোকজন। মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক
স্কুলে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারপিট বাধল বনগাঁয়। স্কুলের জিনিসপত্র তছনছ করা হয়। দু’পক্ষের তিনজন জখম হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার কেউটিপাড়া জেএন হাইস্কুলে। জখম তৃণমূল কর্মীর নাম ইয়ারুল মণ্ডল। জখম দুই বিজেপি কর্মী কল্লোল দাস ও রবিন দাস। সকলেই বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। দু’পক্ষই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে।
স্কুল চলাকালীন যে কাণ্ড ঘটেছে, তা পুরোটাই হয়েছে পড়ুয়াদের চোখের সামনে। ফলে তারা আতঙ্কিত। পড়ুয়ারা অনেকে ভয়ে স্কুল থেকে পালায়। গোলমাল পরে থামলেও এ দিন আর ক্লাস হয়নি।
বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার বলেন, ‘‘গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপির তরফে ওই স্কুলে স্মারকলিপি দিতে যান নেতা-কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, মিড ডে মিলে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়। স্কুলে ভর্তির জন্য পড়ুয়াদের থেকে বেশি টাকা নেওয়া হয়। ভ্যানে মাইক বেধে বিজেপির লোকজন গ্রামে মিছিল করে স্কুলে আসেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, পোস্টার।
বিজেপির লোকজন প্রধান শিক্ষক বাবলু দত্তের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান। এরপরেই আচমকা গোলমাল শুরু হয়। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, বিজেপির প্রতিনিধিরা আলোচনা করার সময়ে হঠাৎ করে আক্রমণ করেন। চেয়ার-টেবিল উল্টে ফেলেন। নথিপত্র লন্ডভন্ড করা হয়। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের।
স্কুলে গোলমালের খবর পেয়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হয়ে যান। দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট বেধে যায়।
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক সুব্রত পাল অবশ্য শিক্ষকদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পনেরো দফা দাবি নিয়ে আমরা প্রধান শিক্ষকের কাছে শান্তিপূর্ণ ভাবেই স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ পিন্টু হালদার নামে এক তৃণমূল কর্মীর নেতৃত্ব তৃণমূলের লোকজন আমাদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে। স্কুলের দুর্নীতি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে ওরা হামলা চালিয়েছে।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের নীলদর্পণ ব্লকের সভাপতি নন্দদুলাল বসু বলেন, ‘‘শিক্ষকদের মারধর করা হচ্ছে দেখে গ্রামের লোকজন প্রতিবাদ করেন। পরে আমাদের লোকজনও যান।’’ প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘গোটা ঘটনাটি অমানবিক। স্কুলের ১০ হাজার টাকাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’