প্রতীকী ছবি
২১ জুলাই কর্মসূচি পালন ঘিরেও এড়ানো গেল না তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দু’পক্ষের মারপিটে জখম হয়েছেন ৮ জন। তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে তাঁদের অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলা এলাকায়। পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকারের। এ দিন তিনি শহিদ দিবস পালনের জন্য কর্মসূচি নিয়েছিলেন। এই কর্মসূচির কাছেই আরও একটি কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। অভিযোগ, দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল বেধে যায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অশোকনগরের প্রাক্তন সভাপতি পাপন সরকারের অভিযোগ, ‘‘ওই ওয়ার্ডের বুথ আহ্বায়কের নেতৃত্বে শহিদ দিবস কর্মসূচি পালন হচ্ছিল। পুরপ্রশাসকের লোকজন এসে মারধর করে। শহিদ বেদি ভেঙে দেয়।’’ প্রবোধ বলেন, ‘‘আমাদের এখানে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। আমরা শহিদ দিবস পালন করছিলাম। কেউ যদি তৃণমূল করে থাকেন, তাঁরা কী ভাবে ওই কর্মসূচির ১০ গজের মধ্যে মাইক বাঁধতে পারেন। ওঁরা তৃণমূলের কেউ নন। লোকসভা ভোটে সকলেই বিজেপি করেছেন। ওঁরাই আমাদের তৃণমূলের লোকজনকে মারধর করেছেন। আমাদের ৪-৫ জন জখম হয়েছেন।’’
এ বিষয়ে বিজেপির অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক স্বপন দে বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। প্রত্যেকেই তৃণমূল কর্মী এবং একটি সময়ে সকলেই প্রাক্তন পুরপ্রধানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।’’
অশোকনগর শহর তৃণমূল সভাপতি সমীর দত্ত বলেন, ‘‘আমি এ দিন শহিদ দিবস কর্মসূচি পালন করতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছিলাম। ২ নম্বর ওয়ার্ডে যা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। খোঁজখবর নিয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব। তবে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি, তাঁরা সকলেই তৃণমূল করেন। জখম বাপন দাস গত পুরসভা ভোটে পুরপ্রশাসকের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন।’’ জখমদের দেখতে এ দিন হাসপাতালে যান অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়। এক জখম ব্যক্তি বিধায়ককে বলেন, ‘‘আমরা নাকি বিজেপি করি!’’ বিধায়ক তাঁকে আশ্বস্ত করেন। ধীমান বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। যারাই এ ঘটনা ঘটাক না কেন, তারা ভুল করেছে। আমি প্রবোধবাবু এবং সমীরবাবুর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলেচনা করব।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলেন, ‘‘সামান্য মনোমালিন্য হয়েছিল। কথা বলে নিয়েছি। সব মিটে গিয়েছে। ওরা পরে সকলে এক সঙ্গে বসে নেত্রীর ভাষণ শুনেছেন।’’