খাঁচাবন্দি: বনবিড়াল। দেগঙ্গায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
মুরগিচোর বনবিড়ালকে ধরে বন দফতরের হাতে তুলে দিলেন গ্রামবাসীরা। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার পশ্চিম চ্যাংদানা মাঝেরপাড়া এলাকায়।
ওই এলাকার বেশ কিছু বাড়িতেই মুরগির খামার রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই সেই সব খামার থেকে মুরগি চুরি হচ্ছিল। খামারে মুরগিদের যে সুতো বা তারের নেটে রাখা হয়, সেটি কেটে খামারঘরে ঢুকে নিয়মিত মুরগি নিয়ে পালাচ্ছিল চোর। দুশ্চিন্তায় পড়ছিলেন এলাকার মুরগি ব্যবসায়ীরা। এ জন্য আর্থিক ক্ষতি হচ্ছিল তাঁদের। প্রাথমিক ভাবে তাঁদের মনে হয়েছিল, এক দল দুষ্কৃতীই বুঝি চুরিটা করছে।
চোরকে হাতনাতে ধরার জন্য গ্রামবাসীরা জোটবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা রাতপাহারার ব্যবস্থা করবেন। চালুও হল লাঠিসোটা নিয়ে খামার পাহারার বন্দোবস্ত। মাসদু’য়েক আগে এক রাতে গ্রামবাসীরা দেখতে পেলেন, চোরের দল নেট কেটে মুরগির খামারে ঢুকে মুরগি নিয়ে পালাচ্ছে।
না, চোরের দল মানুষ নয়। চোর আসলে একদল বনবিড়াল। চেষ্টা করলে হয়তো সেদিন বনবিড়াল মারতে পারতেন গ্রামবাসীরা কিন্তু তাঁরা শুনেছেন, গ্রামে-গঞ্জে এই প্রাণীটির সংখ্যা ক্রমশ কমছে। তাই তাঁরা ঠিক করলেন, বনবিড়াল ধরে তাকে বন দফতরের হাতে তুলে দেবেন তাঁরা।
সেই মতো এক রাতে খাঁচা তৈরি করে তাতে মুরগি রেখে ফাঁদ পাতলেন গ্রামবাসীরা। নুর ইসলাম মণ্ডল নামে এক মুরগি ব্যবসায়ীর পাতা খাঁচায় বুধবার রাতে একটি পূর্ণবয়স্ক বনবিড়াল ধরা পড়ে। সকালে তা সকলের নজরে পড়ে। খবর দেওয়া হয় প্রশাসন ও বন দফতরে। দুপুরে বন দফতরের লোকজন এসে বিড়ালটিকে নিয়ে যান।
গ্রামবাসীদের কথায়, ‘‘এ কথা ঠিক, বনবিড়াল আমাদের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি করেছে। তবে এখন তো বনবিড়াল বিশেষ দেখা যায় না। তাই আমরা ওকে মারিনি। বন দফতরের হাতে তুলে দিয়েছি।’’ বাসিন্দারা জানান, ভবিষ্যতেও বনবিড়াল ধরে একই ভাবে বন দফতরের হাতে তুলে দেবেন তাঁরা।
বন দফতরের কর্তারাও গ্রামবাসীর এই কাজে খুশি।