বাজেয়াপ্ত: কাকদ্বীপে উদ্ধার বাজি। ছবি: দিলীপ নস্কর
প্রকাশ্যে বিক্রি হয়নি প্রায় কোথাও। তারপরেও উদ্ধার হল দেদার বাজি। মিলেছে শব্দবাজিও। পাকড়াও করা হয়েছে প্রচুর বিক্রেতাকে।
শেষ রক্ষা হল না তবুও।
দুই ২৪ পরগনায় দীপাবলির সন্ধ্যায় শোনা গেল বাজির শব্দ। ধোঁয়ায় বিষাক্ত হল পরিবেশ, যা নিয়েই করোনা আবহে বার বার সতর্ক করেছেন পরিবেশবিদ, চিকিৎসকেরা।
অন্য বছরের তুলনায় বাজির দাপট তবে কমই ছিল। পুলিশি নজরদারিও চোখে পড়েছে ভালই। শহরাঞ্চলের তুলনায় বাজির শব্দ বেশি শোনা গেল গ্রামাঞ্চলে। বাজি ফাটানোর জন্য রাত পর্যন্ত পুলিশ পাকড়াও করেছে অনেককে।
গত কয়েক দিন ধরেই দুই জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাত নামলে শোনা যাচ্ছিল বাজির শব্দ। আশঙ্কা ছিল, কালীপুজোর রাত নিয়ে। পুলিশ সাধ্যমতো নজরদারি চালালেও জনতার সচেতনতা যে পুরোমাত্রায় আসেনি, তার প্রমাণ মিলল বিকেল গড়াতেই। শব্দবাজি তো বটেই, দেদার আতশবাজি লাগাতার দূষণ ছড়াল।
তারই মধ্যে ব্যতিক্রম বসিরহাট শহর এবং ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। এখানে বাজির দাপট প্রায় ছিল না বললেই চলে।
শনিবার সকালে লক্ষাধিক টাকার শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে হাড়োয়া এবং বাদুড়িয়া থানার পুলিশ। বেশিরভাগই চকলেট বোম। শুক্রবার রাতেও হরিপুর এবং মুকুন্দপুর গ্রাম থেকে দু’জন বাজি ব্যবসায়ীকে পাকড়াও করে হাড়োয়া থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয় ৪০ কেজি শব্দবাজি। তবে পাশের হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালিতে বিকেল থেকেই ফাটল দেদার শব্দবাজি। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বাজির শব্দও। অনেক জায়গায় পুলিশ গেলে লুকিয়ে পড়েছে বাজি ফাটানোয় ব্যস্ত জনতা।
বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে অশোকনগরে। শহরের এজি কলোনি এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে বাজি বিক্রি করছিল ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ। তাকে পাকড়াও করে পুলিশ। বনগাঁয় এ দিন দুপুরেই কয়েকটি এলাকায় প্রকাশ্যে বাজি ফাটাতে দেখা যায় কয়েকজনকে। পরে অবশ্য এলাকার বাসিন্দাদের শাসনে তা বন্ধ হয়।
সন্ধ্যা নামতেই পুরো মহকুমা জুড়ে ফাটতে শুরু করে শব্দবাজি। শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামের দিকে বাজির দাপট ছিল বেশি। তবে পুলিশ ধরপাকড় চালানোয় বাজির দাপট কিছুটা কমে।
দীপাবলির আগের রাতে ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা-সহ ক্যানিং মহকুমার বিভিন্ন থানা এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ১৪ বস্তা বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে। সন্ধ্যা নামতেই ক্যানিং এর আকাশে আলোর রোশনাই শুরু হয়। শব্দবাজির সঙ্গে আতশবাজির দাপট শুরু হয়। এ বার এলাকায় কোথাও প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি হয়নি। কিন্তু চোরাগোপ্তা বাজি যে প্রচুর বিক্রি হয়েছে, এ দিনের শব্দতাণ্ডব তারই প্রমাণ। তবে শহরের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা বলছে, দাপট অন্যবারের তুলনায় বেশ কম।
দীপাবলির সন্ধ্যা গড়াতেই ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় শব্দবাজি ফাটানো। তবে পুলিশি নজরদারি বেশি থাকায় অন্যবারের মতো বাড়াবাড়ি ছিল না। এ দিন সন্ধ্যায় পোলেরহাটে বাজি বিক্রির খবর আসে পুলিশের কাছে। সেখানে হানা দিয়ে দীপঙ্কর সাধুখাঁ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪০ কেজি বাজি।
বারুইপুর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, নজরদারির জন্য সাদা পোশাকের বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। ডায়মন্ড হারবারে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু এলাকায় বাজি ফাটলেও তাণ্ডব ছিল না।