CC TV

বিকল সিসি ক্যামেরা, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন 

ক্যামেরার ফুটেজ দেখার জন্য গোবরডাঙা থানায় ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম আছে। সেখানে পুলিশ কর্মীরা সর্বক্ষণ মনিটরে নজর রাখেন। কোথাও অপ্রীতিকর কিছু চোখে পড়লে পুলিশ কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারতেন। কিন্তু ক্যামেরা খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেই কাজে সমস্যা হচ্ছে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০৫
Share:

বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। ছবি: সুজিত দুয়ারি

গত বছর গোবরডাঙা শহরের নিরাপত্তা বাড়াতে শহরের অলিগলি-সহ গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও বাজার এলাকায় বসানো হয়েছিল সিসি ক্যামেরা। এর ফলে শহরের নিরাপত্তা বেড়েছিল বলে দাবি করে পুলিশ। বাসিন্দারাও স্বস্তি পান। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কিছু ক্ষেত্রে অপরাধীদের শনাক্তও করে। কিন্তু আমপানের পর থেকে শহরের বেশিরভাগ সিসি ক্যামেরা বিকল হয়ে পড়ে আছে। এর ফলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসী। কেবল গোবরডাঙা নয়, বনগাঁ ও হাবড়া শহরের সিসি ক্যামেরার বেশিরভাগই খারাপ হয়ে রয়েছে। অভিযোগ, এর ফলে দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। দিন কয়েক আগে গোবরডাঙা সাহাপুর মোড় এলাকার বাসিন্দা কৌশিক আঢ্য দেখেন, তাঁর দোকানের পিছনের দিকের দরজা ভাঙা। নিজের দোতলা বাড়ির নীচে মুদিখানা ও মনোহারি জিনিসের দোকান। কৌশিকের দাবি, দুষ্কৃতীরা কয়েক হাজার নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। ওই এলাকায় সিসি ক্যামেরা থাকলেও এখন তা বিকল হয়ে পড়ে আছে। ফলে সিসি ক্যামেরার সাহায্য নিয়েও পুলিশের পক্ষ থেকে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুত সিসি ক্যামেরাগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যামেরার ফুটেজ দেখার জন্য গোবরডাঙা থানায় ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম আছে। সেখানে পুলিশ কর্মীরা সর্বক্ষণ মনিটরে নজর রাখেন। কোথাও অপ্রীতিকর কিছু চোখে পড়লে পুলিশ কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারতেন। কিন্তু ক্যামেরা খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেই কাজে সমস্যা হচ্ছে।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রাচীন জনপদ গোবরডাঙা। ১৮৭০ সালে গোবরডাঙা পুরসভা তৈরি হয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার মোট আয়তন প্রায় ১৪ বর্গ কিলোমিটার। ওয়ার্ড সংখ্যা ১৭টি। মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত-সংলগ্ন গোবরডাঙার মানুষের দীর্ঘ দিনের চাহিদা ছিল পূর্ণাঙ্গ একটি থানার। সেটি তৈরি হয়েছে। তারপর সিসি ক্যামেরা বসার পরে শহরবাসী জানিয়েছেন, এখন শহরের আইন-শৃঙ্খলা আগের থেকে ভাল। তবে ইদানীং দুষ্কৃতীদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে মাঝে মধ্যে। তাই সিসি ক্যামেরা মেরামত করা জরুরি। যদিও এখনই সিসি ক্যামেরা মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পুরপ্রশাসক সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমপানে শহরের বেশিরভাগ সিসি ক্যামেরা বিকল হয়ে গিয়েছে। ওইগুলি মেরামত করতে হলে ১৫-২০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এই মুহূর্তে এত টাকা পুরসভার তহবিলে নেই। তবে ক্যামেরাগুলি চালু করা হবে ভবিষ্যতে।’’

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্যতম ব্যবসার কেন্দ্র হাবড়া শহর। অতীতে চুরি-ছিনতাই-ডাকাতি লেগেই থাকত। বিশেষ করে সোনার দোকান, মিষ্টির দোকানে লুটপাট হয়েছে অতীতে। বহু মানুষ ব্যবসার কাজে শহরে আসতে হয়। সঙ্গে তাঁদের নগদ টাকা থাকে। টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। নিরাপত্তা বাড়াতে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে শহর এলাকা সিসি ক্যামেরায় মুড়ে দেওয়া হয়। এর ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে ইদানীং বহু ক্যামেরা খারাপ হয়ে পড়ে আছে এখানেও। আমপানে ক্ষতি হয় ক্যামেরার। তারপর আর মেরামত করা হয়নি। হাবড়া থানার আইসি গৌতম মিত্র বলেন, ‘‘বেশিরভাগ ক্যামেরা খারাপ। তবে সেগুলি মেরামত করতে পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’সীমান্ত শহর বনগাঁর পরিস্থিতিও একই। কেপমারি, চুরি, ছিনতাই রুখতে সিসি ক্যামেরার ভাল ভূমিকা ছিল। অতীতে সিসি ক্যামেরার সাহায্য নিয়ে পুলিশ অনেক অপরাধী শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করেছিল। বনগাঁ থানার আইসি মানস চৌধুরী বলেন, ‘‘শহরের ৬৫টি সিসি ক্যামেরার মধ্যে ২০টি মেরামত করা হয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যে বাকি ক্যামেরাগুলি মেরামত করে ফেলা হবে।’’শহরবাসী জানাচ্ছেন, অনেক ক্যামেরায় ছবির গুণগত মান ভাল হয় না। ফলে ছবি দেখে স্পষ্ট করে অপরাধীদের শনাক্ত করা যায় না। উন্নতমানের ক্যামেরা বসানোর দাবি আছে সর্বত্রই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement