দখল: বনগাঁ শহরের যশোর রোডে রাস্তার দু’ধারে এভাবেই গড়ে উঠেছে দোকান। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
বনগাঁ শহরে পথ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ যশোর রোড-সহ প্রধান সড়কগুলিতে ফুটপাত না থাকা। যানবাহন ও পথচারী একসঙ্গে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন।
পথ দুর্ঘটনা কমাতে এবার পদক্ষেপ করল বনগাঁ পুরসভা। পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে শহরের মধ্যে যশোর রোড-সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি রাস্তার দু’পাশে ফুটপাত তৈরি করব। এর ফলে মানুষ নিরাপদে হেঁটে যাতায়াত করতে পারবেন। শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।”
বনগাঁ শহরে যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক রয়েছে কয়েক কিলোমিটার। সড়কটি এমনিতেই সংকীর্ণ। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের একাংশ নিজেদের প্রয়োজনে সড়কের দু’পাশ দখল করে রাখেন। ফলে মানুষের চলাচল করতে খুবই অসুবিধে হয়। দোকানের মালপত্র রাখা হয় সড়কের পাশে।
পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য রোজ শয়ে শয়ে ট্রাক বনগাঁ শহরে যশোর রোড দিয়ে যাতায়াত করে। ট্রাকের পাশাপাশি চলে বাস অটো, টোটো, ছোট গাড়ি, ভ্যান, সাইকেল, বাইক। অতীতে ট্রাকের ধাক্কায় স্কুল পড়ুয়া পথচারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে যশোর রোডে প্রবল যানজট তৈরি হয়। ফুটপাত না থাকায়, মানুষকে যানবাহনের মধ্যে দিয়ে পাশ কাটিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যা বিপজ্জনক প্রবণতা বলেই শহরবাসী মনে করেন।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ফুটপাত কার্যত নেই। যানবাহনের চাপ তো আছেই। সড়কের পাশে একাংশের মানুষ সাইকেল, বাইক, ছোট গাড়ি বেআইনি ভাবে দাঁড় করিয়ে রাখেন। ফলে হেঁটে চলাচল করা যায় না। বিমল গায়েন নামে পথচারীর কথায়, “ফুটপাত তৈরি হবে ভাল সিদ্ধান্ত। তবে পুরসভার কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে, তৈরি হওয়া ফুটপাতটি যেন ফের জবরদখল না হয়ে যায়।”
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ১ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে বিএস ক্যাম্প মোড় পর্যন্ত যশোর রোডের দু’পাশে ফুটপাত তৈরি করা হবে। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে, ৭৮ লক্ষ টাকা। সড়কের দু’পাশে ৪ ফুট করে, মোট ৮ ফুটের কংক্রিটের ফুটপাত তৈরি করা হবে। যশোর রোডে সেখানে নিকাশি নালার উপর স্ল্যাব আছে, সেই জায়গায় ফুটপাত করা হবে না। গোপাল বলেন, “যশোর রোডে ফুটপাত তৈরি করতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁরা প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছে।”
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, যশোর রোডের পাশাপাশি, রামনগর রোড, স্টেশন রোড, ১ নম্বর রেলগেট থেকে ২ নম্বর রেলগেট যাওয়ার রাস্তা, কলেজ রোড, চাকদহ ও বাগদা রোড-সহ বেশ কিছু রাস্তার পাশেও ফুটপাত তৈরি করা হবে। প্রকল্পের জন্য মোট খরচ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। পুরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সড়কগুলিতে সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়েছে। মাপজোকের কাজও চলছে। শহরবাসী মনে করছেন, ফুটপাত তৈরি হলে তাঁরা নির্ভয়ে সড়ক দিয়ে হেঁটে যাতায়াত করতে পারবেন। দুর্ঘটনাও কমবে।