এখান থেকেই জল পৌঁছনোর কথা ওয়ার্ডে। —নিজস্ব চিত্র।
সীমান্ত শহর বনগাঁ পুরসভার বয়স সত্তর ছুঁয়েছে। কিন্তু আজও শহরের সব বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে আর্সেনিকমুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছয়নি। বহু মানুষ পানীয় জল কেনেন। তবে এ বার পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার পদক্ষেপ করল পুরসভা।
সব বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দিতে পুর কর্তৃপক্ষ দিন কয়েক আগে থেকে বাসিন্দাদের মধ্যে আবেদনপত্র বিলি করা শুরু করেছে। বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, “আপাতত পুরসভার ১৫, ১৬, ১৮, ১৯, ২০ ওয়ার্ডের মানুষকে পানীয় জলের ফর্ম দেওয়া এবং পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে। মানুষ জলও পেতে শুরু করেছেন যাঁদের কর পরিশোধ করা আছে, তাঁদেরই ফর্ম দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৫ হাজার পরিবারে সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে অন্যান্য ওয়ার্ডের বাসিন্দাদেরও তা দেওয়া হবে।”
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ দিতে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। শহরের মধ্যে আপনজন মাঠে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করা হয়েছে। মাটির নীচ থেকে জল তুলে ওই সেখানে পরিশোধন করা হবে। তারপরে তা পাঠানো হবে চারটি ওয়াটার রিজ়ার্ভারে। সেখান থেকে জল সব বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
পুরসভার এই পদক্ষেপে শহরবাসী খুশি। তবে কারও কারও আশঙ্কা, অতীতে বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। নদিয়ার চাকদহের গঙ্গা থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডল বলেন, “এর আগেও পুরসভার থেকে পানীয় জলের সংযোগ দিতে ফর্ম বিলি করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষ জল পাননি।” সিপিএমের বনগাঁ শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুমিত কর বলেন, “জল প্রকল্প ছিল, চাকদহ থেকে গঙ্গার জল পরিশোধিত হয়ে সব বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার। সেই প্রকল্প বাতিল হয়েছে। এখন মাটির তলা থেকে জল তুলে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এটা কোনও নতুন বিষয় নয়। বাম আমলে সুশান্ত সরকার পুরপ্রধান থাকাকালীন এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। তবে এই পুরসভা আদৌও বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।”