প্রতীকী ছবি।
গ্রামে পুলিশের টহল চলছে। তবে পরিস্থিতি থমথমে। কথা বলে বোঝা গেল, গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক এখনও কাটেনি। বরং আরও বড় কোনও গোলমাল বাধতে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার হিঙ্গলগঞ্জের দক্ষিণ বাঁকড়া গ্রামে তৃণমূল নেতা ইকবাল আহমেদ গাজি ওরফে মুকুলের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। একজনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হয় আরও একজন। বোমা বাঁধার সময়েই বিস্ফোরণ হয় বলে অনুমান পুলিশের। মুকুলকে গ্রেফতার করা হয়। মৃত আতাউর শেখের বাড়ি বসিরহাটের কোদালিয়া গ্রামে। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। জখম সুজন গাজির বাড়ি দক্ষিণ বাঁকড়াতেই। সম্প্রতি তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর হয়ে গন্ডগোল বাধানোর অভিযোগে তাকে খুঁজছিল পুলিশ।
গ্রামবাসীদের একাংশ জানান, ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। পুকুরের পাড় বাঁধানো, রাস্তা তৈরি, নদীবাঁধের কাজ কে পাবে— তা নিয়ে রেষারেষি চলছে। এ সব কাজে বরাদ্দ টাকার একাংশ নেতাদের পকেটে ঢোকে বলে অভিযোগ এলাকার অনেকেরই।
সম্প্রতি দক্ষিণ বাঁকড়া গ্রামে দিঘির ঘাট করতে কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। কাজ না করেই সেই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী, কোন চিকিৎসক কোন নার্সিংহোমে বসবেন, কত টাকা নিয়ে রোগী দেখবেন, তা-ও ঠিক করে দেন তৃণমূলের নেতারা। সেখান থেকে পকেট ভরায় নেতারা।
অভিযোগ, এ সব নিয়ে দু’পক্ষের রেষারেষিতেই পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। গোলমাল পাকানোর জন্যই একত পক্ষ বোমা বাঁধছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।
মুকুলের বাবা ইমাম আলি অবশ্য বাড়িতে বোমা বাঁধার অভিযোগ মানতে চাননি। এ দিনও তিনি বলেন, “ছেলে-বৌমা নেতা হওয়ায়, প্রতিহিংসাবশত বাড়ির পাশে বোমা ফাটিয়ে আমাদের ফাঁসানো হয়েছে।”
তবে সে কথা মানেন না দলেরই একাংশ। স্থানীয় বাসিন্দা জামিরুল গাজি, ইয়াকুব কারিগর, শুভসুন্দর মণ্ডলরাও জানান, পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুকুল ও তার সঙ্গীরা সন্ত্রাস শুরু করেছিল। মানুষকে ভয় দেখাতেই বোমা তৈরি করা হচ্ছিল।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সহিদুল্লা গাজি বলেন, “মস্তান হটিয়ে বাঁকড়া বাঁচানোর ডাক দেওয়া হয়েছে। কেউ দোষী হলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।