গ্রামেরই মাছের ভেড়ির কাছে ঝোপঝাড় থেকে বছর ষোলোর ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রতীকী ছবি।
দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পরে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হল এক কিশোরীকে। একটি ভেড়ির ধারে ঝোপের মধ্যে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে ছিল তার মৃতদেহ। পরিবারের অভিযোগ, মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার ভাঙড়ের বামনঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে। সোমবার সকালে ওই গ্রামেরই মাছের ভেড়ির কাছে ঝোপঝাড় থেকে বছর ষোলোর ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতার বাড়ি ওই থানা এলাকাতেই। গত শনিবার থেকে সে নিখোঁজ ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরীর দু’টি হাত বাঁধা ছিল। দেহের পাশেই পড়ে ছিল একটি গামছা। বেশ কিছুটা দূরে পড়ে ছিল তার ওড়না। পরনের পোশাক ছিল অবিন্যস্ত ও ছেঁড়া। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে ওই কিশোরীকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই কিশোরী গত শনিবার বাড়িথেকে বেরিয়েছিল কিছু কেনাকাটা করার জন্য। তার পরে আর বাড়ি ফেরেনি। এরই মধ্যে জানা যায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা, ২৮ বছরের এক যুবকও নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। কিশোরীর পরিবারের তরফেসে দিন ওই যুবকের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, ওই দু’জন বিয়ে করে নিয়েছে। তাদের মধ্যে নাকি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, সে কথা শোনার পরেও কিশোরীর পরিবারের তরফে সে দিন থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কিন্তু রবিবারও মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে সে দিন দুপুরে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানায় নিখোঁজ এবং অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যেরা। যার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করলেও পুলিশ সে দিন কিশোরীর খোঁজ পায়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার পর থেকেই ওই যুবকের পরিবারের সদস্যেরা বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন। পাওয়া যায়নি ওই কিশোরীর মোবাইল ফোনটিও।
ওই যুবকের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, তাদের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গিয়েছেওই কিশোরীর। এবং তারা ভাল আছে। কিশোরীর বাড়িতেও নাকি ফোন করে অভিযুক্ত যুবক জানিয়েছিল, তারা বিয়ে করেছে এবং ভাল আছে। দু’-এক দিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরবে। কিন্তু, ওই সময়ে কিশোরীর বাড়ির লোকজন মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাকে ফোন দেওয়া হয়নি।
মেয়েটির পরিবারের দাবি, থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অভিযোগ পেয়েই যদি পুলিশ ব্যবস্থা নিত, তা হলে হয়তো কিশোরীকে খুন হতে হত না। এ দিন পুলিশি নিষ্ক্রিয় তার অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে মেয়েটির পরিবার।
যদিও পুলিশের দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তারা প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করেছিল। তবে, প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কিশোরী এর আগেও বেশ কয়েক বার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তার সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ দিন মৃতার মা বলেন, ‘‘আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’