Superstition

সাপের ছোবলে মৃত্যু শিশুর, কলার ভেলায় ভাসানো হল দেহ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ছিল বছর চারেকের তুষার দাস। মা ভাত খেতে দিয়ে রান্নাঘরে গিয়েছিলেন তরকারি আনতে। ঘরে একটি সাপের গায়ে পা পড়ে তুষারের।

Advertisement

সমরেশ মণ্ডল

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১৫
Share:

এই ভেলায় ভাসানো হয়েছে শিশুর দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

সাপের ছোবলে মৃত শিশু প্রাণ ফিরে পাবে, এই কুসংস্কারে বিশ্বাস রেখে কলার ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হল দেহ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপের প্রসাদপুর এলাকায়।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যাতেই ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে। বিজ্ঞানের জয়যাত্রার দিনেই সামনে এল কুসংস্কারের এমন নিদর্শন!

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ছিল বছর চারেকের তুষার দাস। মা ভাত খেতে দিয়ে রান্নাঘরে গিয়েছিলেন তরকারি আনতে। ঘরে একটি সাপের গায়ে পা পড়ে তুষারের। সাপটি ছোবল মারে তাকে। চিৎকারে ছুটে আসেন মা। দ্রুত শিশুটিকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। সেখানে চিকিৎসা শুরু হলেও শেষরক্ষা হয়নি। দেহ ময়না তদন্ত না করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাবা-মা দেহ নিয়ে বাড়িতে আসেন। কিন্তু সৎকার না করে বাড়িতেই রেখে দেন। বুধবার সকালে ছেলের প্রাণ ফিরে পাওয়ায় আশায় দেহ কলার ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয় মুড়িগঙ্গা নদীতে। নদীর পাড়ে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনেরা। কলার ভেলা ওই দিন বিকেলে ফিরে এলেও শিশুর প্রাণ ফেরেনি। তুষারের কাকা বিভীষণ দাস বলেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস ছিল, সাপের ছোবলে মৃতকে কলার ভেলায় নদীতে ভাসিয়ে দিলে মা মনসার কৃপায় প্রাণ ফিরে আসে। ’’

Advertisement

সমাজমাধ্যমে বিষয়টি চাউর হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। হারউড পয়েন্ট উপকূল থানার পুলিশ শিশুর দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন দেহ ময়না তদন্ত না করে পরিবারের হাতে তুলে দিল। কাকদ্বীপ মহকুমার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিষেক রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সৌম্যক্রান্তি জানা বলেন, ‘‘বিজ্ঞানের যুগে আজও যে মানুষ এমন ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাসী, এটা দুর্ভাগ্যজনক। এলাকায় সচেতনামূলক প্রচার আরও বেশি করে করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement