—প্রতীকী ছবি।
ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে তৈরি হয়েছে সঙ্কট।
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার অধীনে ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ দুই মহকুমা এলাকায় প্রাথমিক, গ্রামীণ হাসপাতালগুলি ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকেই রক্তের জোগান পায়। তা ছাড়া, বিভিন্ন বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও রক্তের জন্য এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। ওই হাসপাতালে নথিভুক্ত থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছেন প্রায় ১৫০০ জন। নিয়মিত রক্ত দিতে হয় তাঁদের। ৬৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রসূতি-সহ বিভিন্ন রোগীর রক্ত লাগে। দুর্ঘটনায় জখমদের অনেক ক্ষেত্রে রক্ত দিতে হয়। অস্ত্রোপচার করতে রক্তের প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে প্রতিমাসে প্রায় ১৫০০ ইউনিট রক্ত লাগে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
বেশ কিছু দিন ধরে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে মাত্র ৩০ ইউনিট রক্ত মজুত আছে। হাসপাতালের সহকারী সুপার সুপ্রিম সাহা বলেন, “দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে শিবির না হওয়ায় ব্লাডব্যাঙ্কে সামান্য কয়েক ইউনিট রক্ত পড়ে রয়েছে। কয়েকটি গ্রুপের রক্ত নেই। বর্তমানে কোনও রোগীর রক্ত লাগলে তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যের রক্ত নিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।”
এই পরিস্থিতিতে রক্তের জোগান দিতে হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীরা শনিবার দুপুরে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে শিবিরের আয়োজন করেন। সেখানে রক্ত দেন ৫৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। উপস্থিত ছিলেন মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায়।
রক্তের সঙ্কট চলছে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালেও। ওই হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, “বর্তমানে ব্লাড ব্যাঙ্কে মাত্র ৩২ ইউনিট রক্ত মজুত রয়েছে। সারা মাসে প্রায় ৬০০ ইউনিট রক্ত লাগে। আশা করি নির্বাচন মিটলে শিবির হবে।”
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে অবশ্য রক্তের জোগান রয়েছে। তবে নির্বাচনের জেরে শিবির বন্ধ থাকায় খুব শীঘ্রই রক্তের আকাল পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকেদের। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে একশো ইউনিটের আশে পাশে রক্ত মজুত রয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্কে। তবে এর মধ্যে ও পজিটিভ-সহ দু’একটি গ্রুপের রক্ত একেবারেই নেই। প্রতিদিন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের রোগীদের জন্য ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য দশ-বারো ইউনিট রক্ত ব্যয় হয়। তাই দ্রুত রক্তদান শিবিরের আয়োজন না হলে রক্ত সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলেই দাবি চিকিৎসকদের। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক তন্ময় রায় বলেন, “মাসখানেক আগে আমরা এলাকার বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করেছিলাম, যাতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁরা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। তা হলে রক্তের অভাব অনেকটাই মিটবে। কিন্তু নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই শিবির বন্ধ রয়েছে।”