বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন মজুমদার।
জনগণ খেপে উঠলে পুলিশকে টেবিলের তলায় লুকোতে হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন মজুমদার।
বুধবার বিজেপির পক্ষ থেকে গাইঘাটা থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। দশ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। স্বপন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। পুলিশের কড়া সমালোচনা করে স্বপন বলেন, ‘‘তৃণমূলের চামচাগিরি বন্ধ করুন। যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে উর্দি পরেছিলেন, জনগণকে সুরক্ষা দিন। বাবা-মা কষ্ট করে পড়াশোনা শিখিয়েছেন আপনাদের। জনগণের করের টাকায় মাইনে পান। জনগণ এক বার খেপে গেলে এখানে, গাইঘাটা থানাতেও আপনাদের টেবিলের তলায় লুকোতে হতে পারে।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিজেপি নেতাদের বক্তৃতার ফলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে।
এর আগে রাজ্যে নানা ঘটনায় পুলিশকে জনতার হাত থেকে বাঁচতে পালাতে দেখা গিয়েছে। টেবিলের তলায় লুকোনোর ঘটনাও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। স্বপনের অভিযোগ, ‘‘থানায় এক জন দালাল আছেন। তিনি নাকি ওসির থেকেও বড়। তাঁর কাজ বিজেপির কার্যকর্তাদের ধরে ধরে মিথ্যে মামলা দেওয়া। তৃণমূলের দালালেরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।" স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের হুঁশিয়ার করেছেন স্বপন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা শুনেছি সিপিএম আমলে বাঘে-গরুতে জল খেত, সেই বাঘা বাঘা নেতা লক্ষ্ণণ শেঠ, মজিদ মাস্টারেরা এখন কোথায়? তৃণমূলের বাঘা বাঘা নেতাদের অবস্থাও একই রকম হবে। ওদের বাঘের বাচ্চা অনুব্রত মণ্ডল এখন কুকুরের বাচ্চা, ছাগলের বাচ্চা হয়ে গিয়েছে।" অশোকও পুলিশকে কটাক্ষ করে বলেন, "এতই যদি তৃণমূলের হিতাকাঙ্খী হন, তা হলে উর্দি খুলে তৃণমূলের পতাকা ধরুন।" পুলিশকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে হবে বলে দাবি করেন রামপদ। গত পঞ্চায়েত ভোটে গাইঘাটা ব্লকে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিজেপি নেতৃত্ব এ দিন জানিয়েছেন, এ বার ‘চোখে চোখ রেখে’ লড়াই হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিজেপি থানায় যে দালালের কথা বলছে, তিনি এক জন মুহুরি। তিনি যাতে থানা চত্বরে কোনও কাজ করতে না পারেন, তা দেখা হবে। অন্য অভিযোগগুলিও খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।
এ দিনের কর্মসূচিতে গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর অনুপস্থিত ছিলেন। যা নিয়ে কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। সুব্রতকে বার বার ফোন করলেও যোগাযোগ করা যায়নি। স্বপন বলেন, "বিধায়কদের বিধানসভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক থাকে। ব্যক্তিগত কাজ থাকতে পারে।"
বিজেপি নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, "এখানে বিজেপির পায়ের তলায় মাটি নেই। পঞ্চায়েতে ভরাডুবি হবে বুঝতে পেরে নেতারা হিংস্র হয়ে উঠেছেন। পুলিশকে নিশানা করছেন। এর ফলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে দায় বিজেপি নেতাদের নিতে হবে।"