শুভেন্দু অধিকারীর ডাকা জনসভার জন্য প্রস্তুতি চলছে। রবিবার পেট্রাপোলে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের নিঃশর্তমুক্তির দাবিতে এবং সেই দেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ সোমবার ভারত-বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্তে প্রতিবাদ সভা করতে আসছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। উপস্থিত থাকার কথা বিজেপির বেশ কিছু বিধায়ক এবং সাধু, গোসাঁইদের। তবে এর ফলে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত এবং ব্যবসা-বাণিজ্য কতটা স্বাভাবিক থাকবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যেই।
বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে যে, এই প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে সনাতনী ঐক্য পরিষদ। এ দিন সভাস্থলের প্রস্তুতি দেখতে আসেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া এবং বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার। অশোক বলেন যে, ‘‘সভায় বিজেপির কোনও পতাকা, ব্যানার থাকবে না। সভা হচ্ছে সনাতনী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে।’’ এই সভার ফলে দুই দেশের মধ্যেকার যাতায়াত এবং বাণিজ্য ব্যাহত হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন করা হলে অশোক অবশ্য স্পষ্ট কিছু জানাননি। তিনি শুধু বলেন, “যা হবে, সোমবার দেখতে পারবেন।”
তবে বিজেপি সূত্রেও জানা গিয়েছে, ওই দিন পেট্রাপোল সীমান্ত অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকছে। সেই আশঙ্কায় রবিবার আরও বেশি করে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার তাগিদ দেখা যায়। যাওয়ার আগে ইউনুসের সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে দেন অনেকেই।
এ দিন বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন অশোকনগরের বাসিন্দা মতুয়া ভক্ত গোলক বিশ্বাস। তিনি গিয়েছিলেন বাংলাদেশের গোলাপগঞ্জে তাঁর গুরুর আশ্রমে। গোলক বলেন, “গুরুধামে আরও কয়েক দিন থাকার কথা ছিল। কিন্তু জীবনের আশঙ্কায় দ্রুত ফিরে আসতে বাধ্য হলাম।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয়দের এখন ওই দেশে দেখলেই গালিগালাজ করা হচ্ছে। ওষুধের দোকান থেকে ভারতীয় বলে আমাকে ওষুধ পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছিল না। অনেক অনুরোধ করে এক পাতা ওষুধ কিনতে পেরেছি।’’
এ দিন এ দেশে এসেছেন সাতক্ষীরার বাসিন্দা স্বপন পাল। তিনি বলেন, “আমরা দেশে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আছি। তবে জন্মভূমি ছেড়ে তো আর ভারতে চলে আসতে পারি না। ওই দেশে আমাদের জন্ম। জমিজমা, ভিটে বাড়ি সব আছে। তাই লড়াই করেই বাঁচতে হবে।’’
এ দিন বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের একটি দল পেট্রাপোলে পৌঁছন। বিশ্ব শান্তি এবং বিশ্ব মানবতার কল্যাণে আয়োজিত একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে তাঁরা বিহারের বুদ্ধগয়ায় যাবেন। তাঁদের বক্তব্য, এখন ভারত সরকার স্বাভাবিক ভাবে ভিসা দিচ্ছে না। ভিসা না পেলে বাংলাদেশের মানুষ বিনা চিকিৎসায় থাকবেন।