শীত পড়তেই লেপ, কম্বল উঠেছে গৃহস্থের বিছানায়। আর তার সঙ্গেই তাল দিয়ে ছিঁচকে চুরি বাড়তে শুরু করেছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। সাত দিনে চুরির সংখ্যা ২৬। চুরি আটকাতে গিয়ে হিমসিম পুলিশ থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা।
দিন দু’য়েক আগে জগদ্দলের পানপুর মোড়ের কাছে পাঁচটি দোকানে শাটারের তালা ভেঙে চুরি হয়েছে জিনিসপত্র। তার কিছুদিন আগে ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে গিয়েছে চোর। ইছাপুরের নবাবগঞ্জের কাছেও একটি বাড়ির জানালা ভেঙে কাঁসা-পিতলের বাসন নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোরেরা। সে কারণে এ বার কমিশনারেটের কর্তারা ঠিক করেছেন চোরদের ধরতে বাড়ানো হবে মোটরবাইক বাহিনী। পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘লাগাতার নজরদারি রাখতে পারলে অধিকাংশ অপরাধই এড়ানো সম্ভব।’’
সম্প্রতি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে টহলদারি বাড়াতে নতুন গাড়ি কেনা হয়েছে কুড়িটি। কিন্তু জগদ্দল, নৈহাটি, টিটাগড়, কামারহাটির মতো ঘিঞ্জি শিল্পাঞ্চলে সরু রাস্তার সংখ্যা বেশি। গাড়ি নিয়ে সেখানে ঢুকতে সময় লাগে। মোটরবাইক নিয়ে অনেক তাড়াতাড়ি ওই গলিগুলিতে পৌঁছনো যাবে। পাড়ায় পাড়ায় রাত পাহারার জন্য আরজি পার্টি তৈরি করার বিষয়েও জোর দিচ্ছে কমিশনারেট। মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়িয়ে টহলদারি জোরদার করতে এলাকাভিত্তিক বৈঠক ও স্থানীয় সমস্যা নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথাও জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী।
এর পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজও শুরু হয়েছে জোর কদমে। প্রত্যেকটি পুর এলাকায় জনঘনত্ব ও ট্র্যাফিক ব্যবস্থার নিরিখে ৬০-৬৫টি ক্যামেরা বসছে। ইতিমধ্যে বরাহনগর, বেলঘরিয়া, খড়দহ, নৈহাটিতে এই ক্যামেরা বসেছে। এরপর কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের বেশ কিছু জায়গায় ক্যামেরা বসানো শুরু হবে। নাইট ভিসন থাকায় রাতে নজরদারি রাখায় সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে পুরনো অফিসার বা আগে চাকরি করে গিয়েছিলেন এখন বদলি হয়ে আবার ব্যারাকপুরে চাকরি করছেন এমন অফিসারদের নিয়ে একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। যাঁরা পুরনো দুষ্কৃতীদের কাজে লাগিয়ে উঠতি ছিঁচকে চোর থেকে বড় অপরাধের জন্য হাত পাকানো দুষ্কৃতীদের হদিস রাখবেন। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল ভৌগলিক ভাবে বিভিন্ন জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় এখানে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের অবাধ যাতায়াত। নজরদারি বাড়ালে এই যাতায়াতও কমবে।