বার্জ খারাপ, চিন্তায় হোটেল ব্যবসায়ীরা

বার্জ খারাপ। সোমবার এর জন্য বেশ কিছু যাত্রী বকখালিতে আটকে পড়েন। এই অবস্থা চলতে থাকলে ছুটির দিনে বকখালিতে কতটা ভিড় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় এখন হোটেল মালিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নামখানা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

একটিই-সম্বল: কোনও রকমে ছোট বার্জেই পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার

বার্জ খারাপ। সোমবার এর জন্য বেশ কিছু যাত্রী বকখালিতে আটকে পড়েন। এই অবস্থা চলতে থাকলে ছুটির দিনে বকখালিতে কতটা ভিড় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় এখন হোটেল মালিকেরা।

Advertisement

শনি ও রবিবার ছুটি কাটিয়ে সকালেই বকখালি থেকে বেরিয়েছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা অসিতবরণ হাজরা। ছোট গাড়ি নিয়ে তাঁকে নামখানায় প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার উপর দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রাত পর্যন্ত চলে যাত্রিবাহী ছোট গাড়ি পারাপার। সোমবার সন্ধ্যার পর বকখালির দিক থেকে আসা গাড়ির লাইন ঘাট থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নামখানা বিডিও অফিস ছাড়িয়ে চলে যায়।

গঙ্গাসাগর মেলার সময় এমনিতেই বকখালির দিকে পা রাখতে পারেননি পর্যটকরা। গঙ্গাসাগরমুখী তীর্থযাত্রীদের ভিড়ে নামখানার দিক থেকে হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী পেরিয়ে বকখালির দিকে যাওয়া যায়নি বললেই চলে। মেলার পরে সরস্বতী পুজো, নেতাজি জন্মদিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবস। স্বাভাবিক ভাবেই প্রচুর ভিড় আশা করছিলেন বকখালির হোটেলের মালিকেরা। কিন্তু তাতে জল ঢেলে দিয়েছে বার্জ খারাপ হয়ে যাওয়া। রবিবার বিকেল থেকে নারায়ণপুর-নামখানা ফেরির বড় বার্জ মৎস্যগন্ধা খারাপ হয়ে গিয়েছে। সোমবার পর্যন্ত তা সারানো হয়নি। ভরসা একমাত্র ছোট বার্জ।

Advertisement

রাজ্য পরিবহণ নিগমের এমডি নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘কুচিপাথর ভর্তি অতিরিক্ত ভারী লরি বার্জের উপর চাপাতে নিষেধ করা হয়েছিল। কারণ বার্জ অতটা ভার নিতে পারে না। তা চাপানোর ফলেই লোহার পাটাতন বেঁকে গিয়েছে। তা সারানোর কাজ দ্রুত শুরু করা হচ্ছে।’’ সোমবারও ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। তা হতে হতে মঙ্গলবার। সোমবার থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে, কলকাতা-বকখালি সরকারি বাস পরিষেবা।

গঙ্গাসাগর মেলার সময় নামখানা থেকে চেমাগুড়ি হয়ে তীর্থযাত্রীদের ভিড় থাকে। ফলে বকখালির দিকে গাড়ি নিয়ে যাওয়া পর্যটকদের দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। তাই এই সময় আগে থেকে বুকিং হলেও তা শেষ মূহূর্তে বাতিল হয়ে যায়। মেলা শেষ হয়েছে ১৭ জানুয়ারি।

এরপর শুক্রবার থেকেই বকখালিতে ভিড়তে শুরু করেছিলেন অনেক পর্যটক। কিন্তু সোমবার ফেরার সময় তাঁদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। বকখালি হোটেল মালিকদের একটি সংগঠনের নেতা অপূর্ব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বকখালির পর্যটন নিয়ে উদাসীনতা বাড়ছে। আমরা গঙ্গাসাগর মেলার সময় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার ব্যবসা হারিয়েছি। রবিবারের পরে অনেক বুকিং বাতিল করতে হয়েছে। কারণ দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকেই ফিরে গিয়েছেন।’’ নামখানার নারায়ণপুর থেকেই অনেক পর্যটককে এ দিন ফিরে আসতে হয়েছে।

নামখানার ভেসেল পরিবহণ ইউনিয়নের নেতা বাদল জানা বলেন, ‘‘বড় বার্জটি মাঝে মধ্যেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তা সারানোর জন্য তৎপরতা নেই। আমরা কী করব? ছোট বার্জে পাঁচটির বেশি গাড়ি তোলার ঝুঁকি রয়েছে।’’ বড় বার্জে বাস এবং ছোট গাড়ি মিলিয়ে ১০টি গাড়ি পার হতে পারে। তাই ছোট বার্জের পরিষেবায় গাড়ির লাইন এবং বিরক্তি দুই বাড়ছে। কবে বড় বার্জ আবার চালু হবে তার প্রতীক্ষায় সবাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement