প্রতীকী চিত্র।
এক ব্যক্তিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের উপপ্রধান এবং তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হিঙ্গলগঞ্জের সান্ডেলেরবিল পঞ্চায়েতের ভেটকিয়া গ্রামে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম আসরাফ গাজি (৩২)। এই ঘটনায় গুরুতর আহত নুর ইসলাম সর্দার গাজিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কারিমুল্লা গাজি নামে আরও একজনকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে পালিয়ে গিয়েছে উপপ্রধান জয়নাল গাজি, তার ভাই এবং বাকি সঙ্গীরা। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
জয়নাল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তার কথায়, ‘‘ওই তিনজনের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ট ছিলেন এলাকাবাসী। ওরা আমাকে খুনের পরিকল্পনা করছে জানতে পেরে মানুষ গণধোলাই দিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’’ স্থানীয় তৃণমূলের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই আমাদের উপপ্রধান এবং তার ভাই জড়িত নন। বর্তমানে তারা কলকাতার হাসপাতালে এক আত্মীয়ের চিকিৎসায় ব্যস্ত। আসলে তিন দুষ্কৃতী গত পঞ্চায়েতের ভোটের আগে উপপ্রধানের মাকে গুলি করেছিল বলে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। তাই জনরোষের ফলে গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে আসরাফ, নুর ইসলাম এবং কারিমুল্লা বাইকে করে যাচ্ছিল। সকাল ৯টা নাগাদ ভেটকিয়া গ্রামে তাদের পথ আটকায় কয়েকজন। মৃত এবং আহতদের পরিবারের দাবি, উপপ্রধান এবং তার ভাই কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তিনজনকে ধরে খুঁটির সঙ্গে বাঁধে। এরপরে শুরু হয় গণধোলাই। বাঁশ, শাবল দিয়ে তিনজনকে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে প্রথমে ন’নম্বর সান্ডেলের বিল ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাদের বসিরহাট জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই আসরাফের মৃত্যু হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন জয়নালের মা। ওই ঘটনায় আসরাফ গাজি, নুর ইসলাম সর্দার গাজি এবং কারিমুল্লা গাজির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। দিন কয়েক আগে তিনজন জামিনে ছাড়া পায়। সেই থেকে জয়নাল ও তার লোকজনদের সঙ্গে ওই তিনজনের বিবাদ লেগেই থাকত। তারই জেরে এই ঘটনা বলে দাবি পুলিশের।