আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: সামসুল হুদা।
রাতে নির্বাচনী প্রচার সেরে মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। সঙ্গে ছিলেন এক দলের এক নেতাও। অভিযোগ, পিছন থেকে তাঁদের দু’জনকে হাঁসুয়ার কোপ মারা হয়। অভিযোগ আইএসএফের বিরুদ্ধে। যদিও সে কথা মানেননি আইএসএফ নেতারা।
শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের কাশীপুর থানার বামুনিয়া কর্মতীর্থের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের নাম ওহিদুল ইসলাম ও ইব্রাহিম মোল্লা। বাড়ি দক্ষিণ বামুনিয়া এলাকায়। এই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ইব্রাহিম এ বার চালতাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫৩ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী। রাতে বামুনিয়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। সঙ্গে মোটরবাইকে ছিলেন ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য ওহিদুল ইসলাম। ওহিদুল গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
অভিযোগ, বামুনিয়া কর্মতীর্থের কাছে দুষ্কৃতীরা পিছন থেকে হাঁসুয়ার কোপ মারে তাঁদের। চিৎকারে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই হাসপাতালে যান তৃণমূল নেতা সওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম, হাকিমুল ইসলামেরা। ওহিদুল বলেন, ‘‘আমি ওই এলাকায় দলের নেতৃত্ব দিই। সে কারণে আইএসএফের আক্রোশ আমার উপরে। আমাকে প্রাণে মারতে চেয়েছিল ওরা।’’ সওকাতের কথায়, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী হিংসার রাজনীতি করতে চাইছেন। বাইরে থেকে তারা সমাজবিরোধীদের ভাঙড়ে জড়ো করছেন। এলাকায় প্রচুর অস্ত্র মজুত করা হয়েছে।’’
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আইএসএফের ভাঙড় ২ ব্লক সভাপতি রাইনুর হক বলেন, ‘‘তৃণমূল আমাদের নিরীহ ছেলেদের ফাঁসাতে মিথ্যা চক্রান্ত করছে। এই সব নাটক করে ভোটের আগে আমাদের ছেলেদের জেলে ঢোকাতে চাইছে। আমরা এ ধরনের হিংসার রাজনীতি করি না। পুলিশকে বলব, নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা হোক।’’
দলীয় নেতাদের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে তৃণমূল ওই এলাকার আইএসএফ কর্মী মালেক মোল্লা, সাইফুদ্দিন মোল্লা মতিউর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।রাতেই ডিএসপি (ক্রাইম) শেখ আকতার আলি, ওসি প্রদীপ পালের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।
শনিবার রাতেই হাতিশালা দক্ষিণপাড়ায় আইএসএফ, সিপিএম যৌথ ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে পাড়া বৈঠক করছিল। অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। সিপিএম কর্মী লালচাঁদ বাদশাকে মারধর করা হয়। তাঁকে জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘বিরোধীদের কন্ঠরোধ করতে তৃণমূল পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। ওরা বুঝে গিয়েছে, মানুষ ওদের সঙ্গে নেই। ভোট হলে হেরে যাবে। সেই ভয়ে বিরোধীদের মারধর শুরু করেছে।’’ তৃণমূল নেতা হাকিমুল ইসলাম বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। আসলে সিপিএমের সঙ্গে কোনও মানুষ নেই। তাই মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে মিথ্যা নাটক করছে।’’