বন্ধ: রাস্তার ধারের সবক’টি মদের দোকানই বন্ধ। নিজস্ব চিত্র
অর্থবর্ষ শেষ হতেই এ বার পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে গেল কাকদ্বীপের ১৫টি বার এবং বিদেশি মদের দোকান।
এগুলির সব ক’টিই ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং রাজ্য সড়ক থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে ছিল। আবগারি দফতরের তরফে নজরদারি শুরু হয়েছে, যাতে বেআইনি ভাবে বিদেশি বা দেশি মদ বিক্রি না হয়। তবে তাও কাকদ্বীপ থেকে চোরাগোপ্তা মদ বিক্রি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি।
ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানা এলাকা থেকে গত সপ্তাহেই প্রায় ৮০ লিটার বেআইনি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। দু’জন গ্রেফতারও হয়েছিল। লাইসেন্স প্রাপ্ত দোকান থেকে মদ কিনে নিয়ে গিয়ে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। রাতের দিকে বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চলছে বলে জানান জেলা পুলিশ কর্তারা। সুন্দরবন পুলিশ সুপার তথাগত বসুর কথায়, ‘‘প্রতিনিয়ত নজরদারি চলছে, গত সাত দিনে জেলা থেকে প্রচুর বাংলা মদ এবং বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’’ বারুইপুরে বিষমদ কাণ্ডের পরই পুলিশের তরফেও জেলা জুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে।
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকান থেকেই এগুলি কিনে কিছু বেশি লাভে বিক্রি করা হচ্ছিল বিভিন্ন জায়গায়। নজরদারি চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:শরীরী ভাষায় আসে খদ্দের, স্টেশনেই চলে দেহ ব্যবসা!
কাকদ্বীপ বাজারের কাছে দেবদূত এফএল শপ, নতুন রাস্তার মোড়ে ব্লু মুন বার এবং রেস্তোঁরা রামকৃষ্ণ পঞ্চায়েতের মধ্যে থাকা কাকদ্বীপ ফরেন লিকারে এ দিন গিয়ে দেখা গেল, ঝাঁপ বন্ধ। কাকদ্বীপ ফরেন লিকারের যৌথ অংশীদার তথা রামকৃষ্ণ পঞ্চায়েতের প্রধান সুনীত দিন্দা বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে আগেই আমাদের দোকান এবং কাকদ্বীপ বাজারের দোকান বন্ধ করতে হয়েছে। পরে এই তালিকায় বার এবং অন শপও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ একমাত্র হারুড পয়েন্ট থানার কাছে একটি বিদেশি মদের দোকান খোলা রয়েছে। ওই দোকানের এক কর্মীর দাবি, জাতীয় সড়ক এবং রাজ্য সড়ক থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে দোকানটি নয়। সে কারণেই তা খোলা রাখা হয়েছে।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগর এবং পাথরপ্রতিমা মিলিয়ে মোট ২৫টি লাইসেন্স প্রাপ্ত দোকান রয়েছে। এর মধ্যে কাকদ্বীপে ১১টি। কিন্তু রাস্তার ধারে বলে দু’টি ছাড়া ৯টি বন্ধ রয়েছে। নামখানাতেও ৬টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পাথরপ্রতিমায় ২টি এবং সাগর দ্বীপের ৬টি খোলা রয়েছে। সেগুলি রাস্তার ধারেই রয়েছে। আবগারি কর্তারা জানান, সেগুলি জাতীয় বা রাজ্য সড়কের আওতায় পড়েনি বলে খোলা।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, রাস্তার ধারের দোকান বন্ধ বলে ভিতরে মদের দোকানগুলিতে সন্ধ্যা থেকেই দীর্ঘ লাইন পড়ছে। তবে সচেতন রয়েছে আবগারি দফতর।
মহকুমার আবগারি ডেপুটি কন্ট্রোলার প্রভাস বালা জানান, তাঁদের দফতর থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া দোকানগুলির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। স্টক চেকিং করা হচ্ছে, যাতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানের মদ বেআইনি ভাবে বিক্রি না হয়।