ভাঙড় ২ ব্লকে ১০০ পেরোল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

যত দিন যাচ্ছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর মহকুমার শুধুমাত্র ভাঙড় ২ ব্লকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০৮ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

যত দিন যাচ্ছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর মহকুমার শুধুমাত্র ভাঙড় ২ ব্লকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০৮ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।

Advertisement

শুধু একটি ব্লক এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় বিরোধীরা মনে করছে গোষ্ঠী সংক্রমণ বাড়ছে। প্রশাসন অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এই সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে থামবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বিরোধীদের দাবি, নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকায় লকডাউন ঠিকমতো কার্যকর করা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকায় দোকান, বাজার বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় সকাল থেকে বাজারগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। মাস্ক না পরে মানুষ রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

বিজেপির ভাঙড় ২ ব্লকের মণ্ডল সভাপতি অবনী মণ্ডল বলেন, ‘‘গোষ্ঠী সংক্রমণ থেকে ভাঙড় ২ ব্লক এলাকায় হঠাৎ করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। পুলিশ, প্রশাসনের নজর না থাকায় দোকান, বাজারগুলিতে ভিড় উপচে পড়ছে। কোথাও কোনও শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। এ নিয়ে আমরা দলীয় স্তরে মিটিং করেছি। বুথ স্তরের নেতৃত্বকে বলা হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরও কী ভাবে বৃদ্ধি করা যায়, তা দেখার জন্য।’’

Advertisement

ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ব্লক এলাকায় ১০৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেনেছি। তবে এটা ঠিক নয় যে প্রশাসনের গাফিলতির কারণে আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। আমরা সমস্ত বিষয়ের উপর নজর রাখছি।’’

তবে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, লকডাউন শিথিল করে দেওয়ার পরে যে ভাবে গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালু হয়েছে, জমায়েত চলছে, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে— তার ফলে সংক্রমণ অনেকটাই বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত দু’সপ্তাহের মধ্যে ভাঙড় ২ ব্লক এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করে অনেকটাই বেড়েছে।

ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকার সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। যাঁরা রাস্তায় মাস্ক না পরে বেরোচ্ছেন, তাঁদের মাস্ক পরতে বাধ্য করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

ব্লক প্রশাসন ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক এলাকায় এখনও পর্যন্ত ১০৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন। এঁদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত ক্যানিং কোভিড হাসপাতালে ১ জন, জয়নগর সেফ হোমে রয়েছেন ৫ জন, কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি আছেন ২ জন, নিভৃতবাসে রয়েছেন ৮ জন। এ ছাড়া, এখনও পর্যন্ত ১২ জন রোগী করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের নিয়ে ব্লক প্রশাসন ‘কোভিড ওয়ারিয়র ক্লাব’ গঠন করেছে। ওই সব করোনা জয়ীদের নিয়ে এলাকায় মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় তাঁদের কাজে লাগানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement