বৃহস্পতিবার রাতে বেলঘরিয়ায় নিজের বাড়ির সামনে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় আড়াই বছর পর বাড়ি ফিরলেন শিক্ষক নিয়োগ মামলায় অন্যতম ধৃত তথা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। দু’দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। বুধবার তাঁর মাতৃবিয়োগ হয়েছে বেলঘরিয়ার বাড়িতে। মায়ের শেষকৃত্যের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। দু’দিন পর আবার তাঁকে জেলে ফিরতে হবে।
উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার বাড়িতে থাকতেন অর্পিতার মা। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে আদালতে অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য আবেদন জানান অর্পিতা। তাঁর অন্ত্যেষ্টি ও পারলৌকিক ক্রিয়ায় যোগদানের জন্য অর্পিতার প্যারোলের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
নিয়োগ মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছিল অর্পিতাকে। অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। তার পরেই অর্পিতাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি দু’বছর চার মাস ধরে জেলবন্দি। জেলে রয়েছেন পার্থও।
অর্পিতাকে গ্রেফতার করার পর ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ার ‘ক্লাব টাউন হাইট্স’ আবাসনে তাঁর নামে থাকা দু’টি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় ইডি। সেখান থেকেও ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল অনেক গয়না। ইডির দাবি, অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদে মোট ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ৫ কোটি ৮ লাখ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। নিয়োগ দুর্নীতির টাকার সঙ্গে এর যোগ থাকতে পারে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা।
মায়ের মৃত্যুর পর বেলঘরিয়ার সেই বাড়িতে এসেছেন অর্পিতা। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে পৌঁছন তিনি। পরনে ছিল হলুদ সালোয়ার-কামিজ। সাংবাদিকেরা ঘিরে ধরেছিলেন তাঁকে। কিন্তু অর্পিতা তেমন কথা বলতে চাননি। তাঁর মুখ ছিল সাদা মাস্কে ঢাকা। মহিলা পুলিশকর্মীরা অর্পিতাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসেন।