বার্তা: ছুটিতেও সেবার কাজ করছেন জওয়ানেরা
করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব জুড়ে চালু হয়েছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ বা বাড়িতে থেকে কাজের ব্যবস্থা। সেই ধারণাকে একটু বদলে মানুষের সেবায় ভিন্ন মাত্রা দিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর বাসিন্দা এক ঝাঁক তরুণ।
কাঁধে আগ্নেয়াস্ত্র, পরনে ইউনিফর্ম আর নজরে সীমান্তের প্রতি ইঞ্চি জমি। কেউ বাংলাদেশ লাগোয়া ত্রিপুরায়, কেউ জম্মুর শাম্বা সীমান্তে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে (বিএসএফ) কর্মরত এই তরুণরা বাড়িতে আটকে গিয়েও নেমে পড়লেন নিজের নিজের গ্রাম রক্ষায়। বিশ্বজুড়ে ত্রাস তৈরি করা এই ভাইরাস মোকাবিলায় সচেতনতার প্রচারে পথে নামলেন সাহায্যের ঝুলি নিয়ে। এ দিন পথে নেমে প্রায় ৫০০ পরিবারের কাছে পৌঁছে দিলেন দৈনন্দিন প্রয়োজনের খাদ্যসামগ্রী। ত্রিপুরার বাংলাদেশ লাগোয়া সীমান্তে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৬৬ নম্বর ব্যাটালিয়নে রয়েছেন উৎপল বিশ্বাস। বনগাঁর কলমবাগানের বাসিন্দা ‘লকডাউন’ শুরুর আগেই ছুটিতে এসেছিলেন বাড়িতে। তারপর এই পরিস্থিতিতে কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি। তবে বাড়িতে থেকেও বসে নেই তিনি। স্থানীয় কলমবাগান অক্ষয় সংঘের ত্রাণের কাজে জুড়ে নিলেন নিজেকে। শুধু তিনিই নন, আশপাশে ছড়িয়ে থাকা গ্রামে আরও যে সব জওয়ান ছুটিতে বাড়িতে এসে আটকে পড়েছেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই পরিকল্পনা করেন। উৎপলের কথায়, ‘‘আমরা ছুটিতে ছিলাম ঠিকই কিন্তু এি সংকটের সময় মানুষের পাশে থাকার কাজে তো ছুটি হতে পারে না। আর এ তো আমার নিজের গ্রাম।’’
এ ভাবেই উৎপলের ডাকে সাড়া দিয়ে নেমে পড়েছেন অসীম সরকার। জম্মু থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসেছেন তিনি। বললেন, ‘‘এই সময় ঘরে বসে থাকতে পারি না। তাই সাধ্যমতো নিজেদের এলাকায় নেমে পড়লাম।’’
এ দিন গ্রামের মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে বিএসএফের এইরকম ১৮ জন জওয়ান মঞ্চ বেঁধে ছিলেন অক্ষয় সঙ্ঘের মাঠে। সেখানেই উৎপলরা জড়ো হয়ে শুধু ত্রাণই দেননি, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সচেতনতা তৈরির জন্য বিভিন্ন ভাবে মানুষকে পরামর্শ দিয়েছেন। অক্ষয় ক্লাবের সম্পাদক গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা গ্রামের মানুষের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে গত এক দেড়মাস কাজ করছি। খাদ্যসামগ্রী দিয়েছি। স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা করেছি। হাট-বাজারে ভিড় না করার কথা বলেছি। তবে গ্রামের এই ছেলেরা এগিয়ে আসায় আমরা অভিভূত।’’