ধৃত: অঞ্জু দাস। ফাইল চিত্র
কখনও হাতে নতুন ফোন, কখনও কানে সোনার দুল। আবার হপ্তায় হপ্তায় নতুন নতুন শাড়ি— অঞ্জুর এ হেন বদলটা গত কয়েক মাসে চোখে পড়েছিল পাড়া-পড়়শির। বাইরের একটা ছেলে মাঝে মধ্যে যাতায়াত করে বাড়িতে, তা-ও দেখেছিলেন তাঁরা। ভ্যানচালক মদ্যপ স্বামী বাবুল স্ত্রীর পিছনে এত খরচ করছে কিনা, তা নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়েছিল।
সে সব কথা এখন আসছে পুলিশের কানেও। জানা যাচ্ছে, বছর ছ’য়েকের বড় প্রেমিকা অঞ্জুর জন্য হ্যাচারিতে চাকরির সব টাকাটাই উড়িয়ে দিতে শুরু করেছিল সঞ্জু। খুনের দিন ইলিশ, খাসি কেনার টাকাও সে দিয়েছিল অঞ্জুর হাতে। সেটা অবশ্য ছিল টোপ। অঞ্জুর স্বামী বাবুলই বাজার করে আনেন। জানতেন না, স্ত্রীর হাতে এই তাঁর শেষ খাওয়া! ওই খাবার খাইয়ে মদের আসরেই সঞ্জু ছুরি চালিয়ে খুন করে বাবুলকে, অভিযোগ এমনই।
কিন্তু নতুন শাড়ি-গয়না-মোবাইল কোথা থেকে আসছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করেননি স্বামী?
পুলিশের দাবি, জেরায় অঞ্জু জানিয়েছে, এ সব নিয়ে বাবুলের মাথাব্যথা ছিল না। মদ পেলেই তিনি খুশি। তবে সঞ্জুর সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্কটা কয়েক মাস আগে টের পেয়েছিলেন বাবুল। তা নিয়ে পরিবারে অশান্তিও হয়। তা বলে সঞ্জুর যাতায়াত একেবারে বন্ধ হয়নি বাড়িতে।
বাবুলকে খুনের পরিকল্পনা নিয়ে গত তিন মাসে অঞ্জু-সঞ্জুর নিয়মিত কথা হত বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। সেই মতো ঘুঁটি সাজানো হয়। খুনের পরে ‘নতুন জীবন’ শুরুর আগে আশীর্বাদ নিতে তারাপীঠ গিয়েছিল সঞ্জু। পুলিশের কর্তা জানান, সঞ্জু দাবি করেছে, মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে সব অপরাধ ‘ধুয়ে ফেলে’ অঞ্জুকে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছিল সে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি কে কান্নান বলেন, ‘‘মোহগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল ছেলেটি।’’