গোলমাল ঠেকাতে গিয়ে মৃত্যু বৃদ্ধের

এ দিকে বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনার পর এলাকার মহিলারা মদের কারবার ও নেশা বন্ধ করার দাবি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, নেশার ফলে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

নেশাগ্রস্ত দুই যুবকের গোলমাল ঠেকাতে গিয়ে বাঁশের আঘাতে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। শুক্রবার বিকেলে মারপিট বাধে গাইঘাটা থানার পূর্ব বারাসত আদিবাসী পাড়ায়। তখনই আহত হন নিতাই সর্দার নামে ওই বৃদ্ধ। শনিবার সকালে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় শনিবার বিকেলেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম বরুণ সর্দার ও মিন্টু সর্দার। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ধৃতদের রবিবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

এ দিকে বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনার পর এলাকার মহিলারা মদের কারবার ও নেশা বন্ধ করার দাবি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, নেশার ফলে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে একসঙ্গে মদ্যপান করে বরুণ ও মিন্টু। তারপর একটা মদের বোতল নিয়ে তাদের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। অশান্তি থামাতে এগিয়ে আসে গ্রামের লোকজন। তখন তাদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফের তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গোলমাল শুরু করে। অভিযোগ, ওই সময় বরুণ বাঁশ দিয়ে মিন্টুর মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। বরুণ ফের বাঁশ উচিয়ে মিন্টুকে মারতে গেলে পাশে থাকা নিতাই ঠেকাতে যান। ওই বাঁশের আঘাত লেগে যায় নিতাইয়ের মাথায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পর মহিলারা মদের নেশার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁরা জানান, গ্রামের পুরুষেরা খেতমজুরি, দিনমজুরি করে সংসার চালান। কিন্তু মদের নেশা করে আয়ের টাকা উড়িয়ে দেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে নেশা। মহিলারা বলেন, ‘‘এখানে মদের নেশার ফলে সংসারের উপর তার প্রভাব পড়েছে। স্বামীরা মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে অশান্তি করে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াও লাটে উঠেছে।’’

মহিলারা জানালেন, সব থেকে বড় কথা ছোটরাও বড়দের দেখে মদ খাওয়া শিখছে। ওদের ভবিষ্যতের স্বার্থে এখানে মদের নেশা বন্ধ করা প্রয়োজন। এলাকায় দেশি মদের নেশা বেশি চলে বলে মহিলারা জানান। বাইরে থেকে পুরুষেরা মদ কিনে নিয়ে আসেন। স্বামীদের মদ খাওয়া প্রতিবাদ করলে স্ত্রীর কপালে জোটে মার।

এক মহিলার কথায়, ‘‘মদের কারণে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মদের নেশা বন্ধ না হলে সুস্থ পরিবেশে বাঁচা যাবে না। পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ মদের নেশা বন্ধ করুন।’’

গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ধ্যানেশনারায়ণ গুহ বলেন, ‘‘ওই গ্রাম থেকে মদের নেশা বন্ধ করতে কর্মশালা করে পুরুষের সচেতন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে নেশা করার অভ্যাস বহুদিনের। ৬ মাসে গাইঘাটা থানার পুলিশ থানা এলাকা থেকে ১৫ জন মদ কারবারিকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার হয়েছে বহু মদ। ওই গ্রামের উপর আরও বেশি করে নজর রাখা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement