বীজতলা তৈরি। কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ধান রোপণ করা যায়নি। ভাঙড়ের সাতুলিয়া এলাকায়। ছবি: সামসুল হুদা ।
জুলাই মাস শেষ হতে চলল। এখনও জোরালো বৃষ্টির দেখা নেই। অপর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে আমন ধান রোয়ায় সমস্যায় পড়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু চাষি। মূলত বৃষ্টির জলেই আমন চাষ হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ খেত শুকনো। এর ফলে বীজতলা তৈরি করার পরেও ধান রোয়া যায়নি।
জেলার মধ্যে ভাঙড়ে অন্য ধানের তুলনায় আমন চাষ বেশি হয়। স্থানীয় চাষি আনোয়ার আলি বলেন, ‘‘আমন ধান রোয়ার মতো বৃষ্টি এ বার হয়নি। অপেক্ষা করছি। তিন বিঘা জমিতে আমন চাষ করব বলে বীজতলাও তৈরি করেছি। চারা বড় হয়ে গেলেও রুইতে পারছি না।’’ একই রকম ভুগছেন জেলার আরও অনেক চাষি।
ভাঙড় ২ ব্লক কৃষি আধিকারিক শীর্ষেন্দু আঢ্য বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় আমন চাষের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। চাষিরা বীজতলা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। রোগপোকার আক্রমণ যাতে কম হয়, সে জন্য আমাদের দফতর থেকে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা বীজতলা তৈরি করেছেন, চারাগাছ বাঁচানোর জন্য জলের যে কোনও উৎস থেকে তাঁদের সেচের ব্যবস্থা করতে বলা হচ্ছে। বীজতলায় চারাগাছে পুষ্টিজনিত অভাব দেখা গেলে কী কী মিশ্রণ প্রয়োগ করতে হবে, তা-ও বলা হচ্ছে। যাঁরা এখনও বীজতলা তৈরি করেননি, জলসেচের সুবিধা আছে, এমন জায়গায় স্বল্পমেয়াদি জাতের ধানের শুকনো বীজতলা তৈরি করতে পারেন। আপৎকালীন পরিকল্পনা হিসেবে একসঙ্গে বীজ না পেলে ৫-৭ দিন অন্তর দুই দফায় বীজ ফেলা যেতে পারে। মূল জমি চষে চারপাশে আল দিয়ে রাখতে হবে। যাতে বৃষ্টি হলেই জল ধরে রাখা যায়। চাষিরা ‘শ্রী এবং ‘ড্রাম সিডিং’ পদ্ধতিতেও আমন চাষ করতে পারেন।
তবে, শুধু ধান নয়, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় পাট পচানোর ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, পাট পচানোর জন্য প্রয়োজনীয় জলের অভাব দেখা দিলে যন্ত্রের সাহায্যে কাঁচা পাটের আঁশ ছাড়িয়ে পচাতে হবে। এ ছাড়াও খেতের এক কোণে নিচু অংশে ৮০ ফুট লম্বা, ৩০ ফুট চওড়া, ৫ ফুট গভীর পুকুর কেটে ১৫০-৩০০ মাইক্রনের পলিথিন বিছিয়ে তার মধ্যে পাট পচানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আনাজ চাষের ক্ষেত্রে সকাল অথবা বিকেলের দিকে সেচ দিলে ভাল হয়। যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে সেচের জল পাওয়া যাবে না সেখানে অনুসেচ যেমন বিন্দু সেচ বা ফোয়ারা সেচ দেওয়া যেতে পারে।