মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ বিলি নিয়ে কোনও রাজনীতি করতে নিষেধ করেছেন। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে প্রশাসনকে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও প্রচুর অভিযোগ মিলেছে বিভিন্ন ব্লকে।
এই ক’দিনের টানা বৃষ্টির জেরে জমা জলে ডায়মন্ড হারবারের ৯টি ব্লকেই কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, মাছের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মগরাহাট ১ ও ২, মন্দিরবাজার, মথুরাপুর ১ ও ২ এবং কুলপি। ওই ব্লকগুলিতে ইতিমধ্যে পৌঁছে গিয়েছে ত্রিপল, চাল-সহ কিছু উপকরণ। ক্ষতিগ্রস্তের জন্য বর্তমানে কোথাও ত্রিপল বিলি কোথাও ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। আর ওই ত্রিপল বিলি নিয়ে দলবাজির অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন ব্লকে। মগরাহাট ১ ব্লকে সিপিএমের অভিযোগ, ত্রাণ-সংক্রান্ত কোনও বিষয় আমাদের জানানো হয়নি। কত ত্রিপল, চাল আসছে সে বিষয়ে তাঁরা অন্ধকারে রয়েছেন। মগরাহাট ২ ব্লকের সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, ৩০০টি ত্রিপল ১৪টি পঞ্চায়েতে দেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমাদের সমর্থকেরা ওই ত্রিপল পায়নি। মন্দিরবাজারের সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অলোক রায়ের অভিযোগ, শাসকদলের লোকেরাই ত্রিপল পাচ্ছে। এর প্রতিবাদে সিপিএমের পক্ষ থেকে বিডিওকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।
একই অভিযোগ মথুরাপুর ১ ব্লকের বিরোধীদের। সিপিএম নেতা রহিচউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘তৃণমূল শুধু নিজেদের দলের লোককেই ত্রাণ বিলি করছে। শীঘ্রই তা বিডিও কে জানাব।’’ কিন্তু মথুরাপুর ২ পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে রয়েছে। এমনকী, ওই পঞ্চায়েতের অধীনে ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএমের ৯টি ও তৃণমূলের রয়েছে ২টি। নদীনালা ঘেরা ওই পঞ্চায়েত সমিতি জমা জল প্লাবিত হয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কঙ্কনদিঘি, কুমড়োপাড়া, নগেন্দ্রপুর ও নন্দকুমারপুর ওই চারটি পঞ্চায়েত। ওই ব্লকে এখনও পর্যন্ত ত্রিপল এসেছে ৬৫০টি এবং চাল এসেছে প্রায় ২০ কুইন্ট্যাল। নন্দকুমারপুরে ৪টি ও কাশীনগর ১ ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছে প্রায় ২০০০ হাজার পরিবার। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সভাপতি পীযূষকান্তি বারিক বলেন, ‘‘১১টি পঞ্চায়েতে ১৬৭টি বুথ রয়েছে। প্রতিটি বুথে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫টি করে ত্রিপল দিতে পেরেছি। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে সকলকে ত্রাণ দিতে পারছি না।’’ তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের দখলে থাকা গিলারছাদ পঞ্চায়েতে অতিরিক্ত ৫০০টি ত্রিপল প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই পঞ্চায়েতের এলাকাগুলি তেমন ভাবে ক্ষতিগ্রস্তই হয়নি বলে তাঁর দাবি।
এ বিষয়ে জেলা সভাধিপতি তৃণমূলের শামিমা শেখ বলেন, ‘‘সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তদন্ত করেই ত্রিপল বা ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।’’ মথুরাপুর ২ বা কুলতলিতে সিপিএম ক্ষমতায় থাকায় ওরা চরম দলবাজি করছে। আমাদের কর্মীদের পঞ্চায়েতে বা ব্লকে ঢুকতে দিচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ। গিলারছাট পঞ্চায়েতে তাঁর তহবিল থেকে ৫০০টি ত্রিপল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি।