প্রতিবাদ: টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। ছবি: নির্মল বসু।
ত্রাণসামগ্রী চুরির অভিযোগে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। মঙ্গলবার সকালে হিঙ্গলগঞ্জের উত্তর বোলতলা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ, ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। তৃণমূল কর্মীদের একাংশ চুরির ঘটনায় যুক্ত বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। যদিও শাসক দলের তরফে তা অস্বীকার করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবন লাগোয়া দুর্গম এলাকায় নদীর বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ওই এলাকায় ত্রাণ বিলি করেছে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাদের দেওয়া ত্রাণসামগ্রী রাখা হয় কাটাখালি সেতু সংলগ্ন হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েতের উত্তর বোলতলায় একটি ঘরে। সেখানেই রান্না হয়। তার পরে সেই খাবার পৌঁছে দেওয়া হয় দুর্গতদের কাছে। অভিযোগ, সোমবার রাতে দুষ্কৃতীরা ঘরের তালা ভেঙে তিন বস্তা আলু, দুই টিন সর্ষের তেল-সহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী চুরি করে। এ দিন সকালে সেই ঘটনা জানাজানি হতেই উত্তর বোলতলার কাছে হিঙ্গলগঞ্জ-লেবুখালি রোড অবরোধ করেন গ্রামবাসী। রাস্তার উপরে টায়ার রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এলে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা সেই সব জিনিস নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করতেন। এলাকাবাসী তার বিরোধিতা করায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা ত্রাণসামগ্রী উত্তর বোলতলায় ওই ঘরে রেখে যেতেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সালমা বিবি বলেন, ‘‘আমরা পর্যাপ্ত সরকারি ত্রাণ পাচ্ছি না। বিভিন্ন সংগঠনের তরফে খাবার পাঠানো হয় আমাদের জন্য। সেই খাবার একটা ঘরে রাখা হয়। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তালা ভেঙে সেই ত্রাণসামগ্রী চুরি করে নিয়ে যায়।’’ আর এক গ্রামবাসী সুরজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘বাঁধের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় আমরা এখনও জলমগ্ন। অসহায় অবস্থার মধ্যে রয়েছি। সামনেই ভরা কটাল। নদীর জল ফাঁপবে। তখন কোথায় গিয়ে উঠব তা ভেবে পাচ্ছি না। এই অবস্থার মধ্যে আবার খাবার চুরি হয়েছে। আমরা চাই, অবিলম্বে চোরেদের চিহ্নিত করা হোক। গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হোক তাদের।’’
বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল, বিডিও (হিঙ্গলগঞ্জ) শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী ও পুলিশের কয়েকজন আধিকারিক। উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। গ্রামবাসীর অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিডিও। বিধায়কের দাবি, ‘‘তৃণমূলের নামে মিথ্যা অভিযোগ করে কিছু মানুষ এলাকায় অযথা উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইছেন। আমাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাদের নাম জানাতে হবে। নাম জানালে পুলিশের কাছে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করব। কিন্তু, কেউ নাম বলতে পারছে না। তৃণমূলকে বদনাম করছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।