শাকিলা বিবি। ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও সল্টলেক আমরি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ২ জানুয়ারি এই খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। তাতে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। প্রশাসনের উদ্যোগে ভাঙড় ২ ব্লকের মাছিভাঙা গ্রামের বাসিন্দা শাকিলা বিবির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শাকিলা দীর্ঘ দিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। ১৯ ডিসেম্বর হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তাঁকে কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সেখানে তাঁকে জানানো হয়, এই মুহূর্তে হাসপাতালে বড় কোনও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। এরপরে শাকিলাকে পরিবারের লোকজন সল্টলেক আমরি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয়, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা হবে না। রোগীকে বহির্বিভাগে দেখাতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হবে। চিকিৎসকের ফি, ওষুধ সহ অন্যান্য খরচ রোগীর পরিবারকে বহন করতে হবে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে শুধু হাসপাতালে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের সুযোগ মিলবে। শুধু আমরি নয়, কলকাতার আরও একটি বেসরকারি হাসপাতালে একই কথা বলা হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই রোগীর পরিবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেও সুরাহা পাননি বলে অভিযোগ। পরে শাকিলার ছেলে রবিউল ইসলাম ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায়কে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানান।
এই খবর আনন্দবাজারে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যভবন ও নবান্নে ঘটনার কথা জানায়। স্বাস্থ্য ভবন থেকে রোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও পরিবারকে ফোন করে রোগীকে ভর্তি করানোর কথা বলেন।
আপাতত স্বাস্থ্য ভবনের পরামর্শ মতো সোমবার ওই রোগীকে কলকাতার বিএম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি করার কথা বলেছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। রবিউল বলেন, ‘‘বিডিও ও জেলাশাসকের কাছে কৃতজ্ঞ। সকলের সহযোগিতায় মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন ও আমরি হাসপাতাল থেকে ফোন করে রোগী ভর্তি করার কথা বলা হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী দু’একদিনের মধ্যে মায়ের অস্ত্রোপচার হবে।’’ জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘এ রকম একটি অভিযোগ পাওয়ার পরেই সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সেই মতো চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছি। এ ধরনের অভিযোগ পেলে অবশ্যই সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’