বেপরোয়া: পুজোয় কোভিড-বিধি ভুলে এ ভাবেই পথে নেমেছিলেন মানুষ। ডায়মন্ড হারবারের একটি মণ্ডপের সামনে। ফাইল চিত্র।
পুজো শেষ হতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দিন কয়েক আগেও জেলায় দৈনিক সংক্রমণ ছিল পঞ্চাশের ঘরে। শুক্রবার সেই সংখ্যাটাই আশি ছাড়িয়ে গিয়েছে। জেলা জুড়ে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচশোরও বেশি।
পুজোর কেনাকাটায় বিধি ভেঙে ভিড় হয়েছিল জেলার অনেক জায়গাতেই। পুজোর ক’দিন মণ্ডপগুলিতে উপচে পড়ে ভিড়। অধিকাংশ পুজো মণ্ডপেই মানা হয়নি কোভিড-বিধি। স্বাভাবিক জীবনযাপনে অনেকেই এখন আর কোভিড-বিধি মানছেন না। রাস্তা-ঘাট, বাজার-হাটে সে ভাবে চোখে পড়ছে না মাস্ক বা দূরত্ব-বিধি। অনেকেই মনে করছেন, ভ্যাকসিন নেওয়ায় আর করোনা হওয়ার আশঙ্কা নেই। ফলে একটা গা ছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। এ সবের জেরেই সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করছে চিকিৎসকেরা। সাবধান না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্কও করেছেন তাঁরা।
এ দিকে, করোনার পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও। দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্যজেলায় এ বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছেন ১২৭ জন। এর মধ্যে ক্যানিং ১ ব্লক এলাকায় ২০ জন, ক্যানিং ২ ব্লকে ১০ জন, জয়নগর ১ ব্লকে ১১ জন, ভাঙড় ২ ব্লকে ১১ জন, রাজপুর-সোনারপুরে ১২ জন আছেন। ডেঙ্গি পরীক্ষার এনএস-১ ও অ্যালাইজ়া টেস্টের সংখ্যা বাড়লে এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যুও হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ বছর এখনও পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় দেড়শো জন। স্থানীয় সূত্রের খবর, পুজোয় সরকারি দফতরগুলি ছুটি থাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ, এলাকার জমা জল পরিষ্কার এবং মশার লার্ভা সংগ্রহের কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, “করোনা ও ডেঙ্গি মোকাবিলায় সমস্ত দফতরের সঙ্গে সমন্বয়সাধন করে কাজ করা হচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন এবং পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গি রোধে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া, বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহ, এলাকার জমা জল ও মশার লার্ভা সংগ্রহের কাজও চলছে।”