অভিযুক্তের ভাইকে চলছে মারধর। নিজস্ব চিত্র।
অনুষ্ঠান বাড়িতে চড়াও হয়েছিল জনা তিনেক যুবক। রবিবার রাতে কল্যাণীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিলপাড়ায় হইচই শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন ওই ওয়ার্ড কমিটির সদস্য মিন্টু তপাদার। বাধা দিতে গেলে ওই যুবকেরা মিন্টুবাবুর হাত লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুরুতর জখম অবস্থায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।
অভিযোগ, ওই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিদ্যাসাগর কলোনির মূল অভিযুক্ত সুমন মণ্ডলের মা ও ভাইকে ব্যাপক মারধর করে ঝিলপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশ। ভাঙচুর করা হয় তাদের বাড়িও। নির্মম ভাবে ওই দু’জনকে মারধরের সময় কেউ তাদের বাধা দেয়নি। ঘটনার সময় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশকে এলাকায় ঢুকতে দেয়নি।
এতকিছুর পরে পুলিশ অভিযুক্ত সুমনকে না পেয়ে তার ভাই সুজিত মণ্ডলকেই গ্রেফতার করেছে। সুমনের মাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যারা প্রকাশ্যে সুজিত ও তার মাকে বেধড়ক মারধর করে, ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে তাদের কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, যারা ওই দু’জনকে মারধর করে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। সুমনের ভাই সুজিতও এলাকায় নানা অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত। সেই অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুমন ও তার দুই সঙ্গী পলাতক। তাদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী মিন্টু তপাদার এখন বিপন্মুক্ত বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
ঘটনার পরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। সিপিএমের অভিযোগ, সুমন তৃণমূলের ছত্রছায়াতেই ছিল। তৃণমূল অবশ্য সে অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছে, এটা সমাজবিরোধীদের কাণ্ড। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে সুমন ও তার দুই সঙ্গী ঝিলপাড় কলোনিতে গিয়েছিল। সেখানে একটি বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছিল। মদ্যপ অবস্থায় তারা সেই বাড়িতে চড়াও হয়। ওই অনুষ্ঠান বাড়ির সদস্যদের কাছ থেকে তারা মদ কেনার জন্য টাকার দাবি করে। বাড়ির লোকজন তাদের টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সুমন ও তার সঙ্গীরা কয়েকজনকে মারধর শুরু করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজন সুমনদের তাড়া করে। সেই সময় তারা পালাচ্ছিল। এত হইচই শুনে ছুটে আসেন মিন্টুবাবু। তিনি সুমনদের বাধা দেন। তারপরেই সুমন ওয়ান শটার বের করে মিন্টুবাবুর হাতে গুলি করে। রবিবার রাতেই সুমনের খোঁজে তার বাড়িতে চড়াও হয়েছিল এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। তখনকার মতো তাকে না পেয়ে ফিরে আসে তারা। সোমবার সকালে ফের তারা ওই বাড়িতে চড়াও হয়।