নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস। নিজস্ব চিত্র।
পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল রায়দিঘির এক বাসিন্দার। মঙ্গলবার ভোররাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির হরিপালের ইলিপুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম তাপসী হালদার (৩৯)। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির ময়রারমহল গ্রামে। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন তাঁর স্বামী বাবলা ও তাঁদের দুই সন্তান-সহ আরও কয়েকজন।
এ দিন দুর্ঘটনার জেরে অহল্যাবাই রোডে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়। পুলিশের অনুমান, বাসচালক তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়াতেই এই দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে রায়দিঘি বাজার থেকে একটি বাসে চালক-সহ ৬৭ জন যাত্রী অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে রওনা দেন। দু’দিনের ট্যুর শেষে বুধবার বিকেলে ফেরার কথা ছিল। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ বাস ফিরতি পথে রওনা দেয়। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার বাঁদিকের নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে বাস। শব্দ শুনে আশেপাশের বাসিন্দারা চলে আসেন। আহতদের উদ্ধার করে হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। ঘটনাস্থলে যান সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না ও তাঁর স্ত্রী হরিপালের বিধায়ক করবী মান্না। বুধবার বিকেলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মৃত তাপসী হালদারের স্বামীর হাতে দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। রজনী কপাট নামে বাসের এক যাত্রী বলেন, “বাসের মাঝামাঝি জায়গায় বসেছিলাম। বাস ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পরে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভাঙল। দেখি, জল-কাদার মধ্যে আটকে পড়ে আছি। সামনেই বাসের দরজা ছিল। কোনও মতে বেরিয়ে আসি। যাঁরা অন্য দিকে বসেছিলেন, তাঁদের পাশের কাচের জানলা ভেঙে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।”
তাপসীর ময়রারমহল গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানা গেল, স্বামী-স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়ির কাছেই থাকেন বাবলার মা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বৃদ্ধা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। তবে বৌমার মৃত্যুর খবর বা ছেলে-নাতিদের বিপদের কথা তাঁকে বুধবার রাত পর্যন্ত জানানো হয়নি। প্রতিবেশীরা জানালেন, ওই বাসে রায়দিঘির ময়রামহল, গায়েনপাড়া, কুমড়োপাড়া, কঙ্কনদিঘি শহর-সহ ৫-৬টি গ্রামের বাসিন্দারা ছিলেন।