পোস্টমাস্টারের দেখা মেলে না, হয়রান মানুষ

ডাকঘর বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক নেই-রাজ্য। অথচ এর ভরসাতেই রয়েছেন জেলা-শহরের লক্ষ লক্ষ মানুষ। কী অসুখে ভুগছে জেলার ডাকঘরগুলি—সরেজমিনে দেখল আনন্দবাজার। ইন্টারভিউয়ের চিঠি, চাকরির চিঠি, ব্যাঙ্কের দরকারি কাগজপত্র, প্যানকার্ড, পাসপোর্ট-সহ জরুরি নথিপত্র জয়রামখালি ডাকঘরের ঠিকানায় এলে সে সব পেতেও যথেষ্ট ঝক্কি পেতে হয় এলাকাবাসীকে।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা 

ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০২:২৮
Share:

ক্ষোভ: এই ডাকঘর নিয়েই। নিজস্ব চিত্র

ডাকঘর আছে। খাতায়-কলমে আছেন পোস্টমাস্টার, পিয়ন। অভিযোগ, তবু মেলে না পরিষেবা। দিনের পর দিন ডাকঘরে গিয়ে হয়রান হতে হয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

এমনই অবস্থা ক্যানিংয়ের জয়রামখালি ডাকঘরের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই ডাকঘরের দরজায় তালা ঝোলে। পোস্টমাস্টার দিনের পর দিন আসেন না। মাঝে-মধ্যে দু’একদিন এলেও এক-আধঘণ্টা থেকে চলে যান। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের যে সব প্রকল্পের সুবিধা ডাকঘর থেকে পাওয়া সম্ভব, মেলে না তার কিছুই। মানি অর্ডারটুকুও করা যায় না বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, ইন্টারভিউয়ের চিঠি, চাকরির চিঠি, ব্যাঙ্কের দরকারি কাগজপত্র, প্যানকার্ড, পাসপোর্ট-সহ জরুরি নথিপত্র জয়রামখালি ডাকঘরের ঠিকানায় এলে সে সব পেতেও যথেষ্ট ঝক্কি পেতে হয় এলাকাবাসীকে।

ডাক-সংক্রান্ত কাজকর্ম থাকলে তা হলে কী করেন এলাকাবাসী?

Advertisement

প্রায় ছ’কিলোমিটার দূরে ক্যানিং পোস্টঅফিসে যেতে হয় তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দা অসিত সর্দার, খোকন নস্কররা বলেন, “এই ডাকঘর থেকে সাধারণ মানুষ ন্যূনতম পরিষেবা পান না। সপ্তাহে দু’একদিন সামান্য সময়ের জন্য ডাকঘর খোলা থাকে। বাকি সময় বন্ধই পড়ে থাকে। পোস্টমাস্টার ঠিক মতো আসেন না। আসেন না পিয়নও।”

স্থানীয় নিকারিঘাটা পঞ্চায়েতের প্রধান তাপসী সাঁপুই এই দুর্ভোগের কথা জেনে একাধিকবার পোস্টমাস্টারকে চিঠি দিয়েছেন। তবু সমস্যার সমাধান হয়নি। তাপসী বলেন, “আমার দফতরের নীচের তলাতেই রয়েছে পোস্টঅফিসটি। বেশিরভাগ সময়েই সেটি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে। টাকা জমা দেওয়া বা তোলা-সহ নানা কাজকর্ম নিয়ে মানুষ আসেন। কিন্তু পোস্টঅফিস বন্ধ থাকায় তাঁদের ফিরে যেতে হয়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” সপ্তাহের এক কাজের দিনেও জয়রামখালি ডাকঘর তালা বন্ধ দেখে পোস্টমাস্টার তনুশ্রী পালের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, “সপ্তাহের সব কাজের দিনই অফিসে যাই। নির্দিষ্ট সময় মেনে অফিস করি। এলাকার সাধারণ মানুষকে যাবতীয় ডাক পরিষেবা দিয়ে থাকি।’’

এই কাজের দিনে তাঁর অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, বারুইপুরে হেডঅফিসে জরুরি কাজ থাকায় জয়রামখালি গিয়েও তাঁকে চলে আসতে হয়েছে।

তা হলে এলাকাবাসীর অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন?

তনুশ্রী জানান, কর্মীসংখ্যা কম থাকায় সাব-অফিস বা হেডঅফিস থেকে চিঠি আনা-নেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে জয়রামখালি ডাকঘরটি বন্ধ রাখতে হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement