প্রতীকী ছবি।
ট্রেনের কামরা থেকে ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল এক যাত্রীর গয়না-ভর্তি ব্যাগ। সেই ঘটনার কিছু ক্ষণ পরেই চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন তিনি। রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকিনাড়ার মাদরালের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি বুধবার দুপুরে নৈহাটি থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার সোনার গয়না-ভর্তি ব্যাগ নিয়ে ডাউন ট্রেনে উঠেছিলেন। কাঁকিনাড়া স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়ে সেই ব্যাগটি দুষ্কৃতীরা ছিনতাই করে বলে অভিযোগ। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে কী করবেন, বুঝে উঠতে না পারলেও ওই ব্যক্তিকে সহযাত্রীদের অনেকেই পরামর্শ দেন, নৈহাটি স্টেশনে গিয়ে রেল পুলিশে অভিযোগ জানাতে। সহযাত্রীদের কথা শুনে ওই ব্যক্তি ফের আপ ট্রেন ধরে নৈহাটি স্টেশনে আসেন। তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে নেমে পুলিশের কাছে যাওয়ার বদলে বাড়িতে ফোন করে ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা জানান এবং এ-ও বলেন যে, তিনি আত্মহত্যা করতে চলেছেন।
মঙ্গলবার রাতে আপ কল্যাণী লোকাল থেকে নামা এক যুবকের কাছ থেকে টাকা-ভর্তি ব্যাগ মেলার পরে এ দিনও নৈহাটি স্টেশনে পুলিশের নজরদারি ছিল। এ দিকে, ওই ব্যক্তির ফোন পাওয়ার পরে পরিবারের লোকেরাও জিআরপি থানায় ফোন করে ঘটনার কথা জানান। তত ক্ষণে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি আপ ট্রেন ঢুকতে শুরু করেছে। সেই ট্রেনের সামনেই ঝাঁপ দেন মধ্যবয়সি ওই ব্যক্তি। আচমকা দৃশ্যটি দেখে উল্টো দিকের প্ল্যাটফর্মে টহলরত এক রেল পুলিশকর্মী লাইন পেরিয়ে এসে হ্যাঁচকা টানে তাঁকে ট্রেনের সামনে থেকে সরিয়ে দেন। কিন্তু তত ক্ষণে ট্রেনের কাউক্যাচারের ধাক্কায় ওই ব্যক্তির মাথা ফেটে কান দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরোতে শুরু করেছে। প্রথমে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। পরে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বলেই হাসপাতাল সূত্রের খবর।
পরিবারের লোকেরা জানান, ওই ব্যক্তি সোনার গয়না তৈরি করেন। মূলত কলকাতার বিভিন্ন দোকান থেকে বরাত নিয়ে এসে গয়না বানিয়ে সেগুলি পৌঁছে দেন। এ দিনও সেই কারণেই নৈহাটি থেকে গয়নার ব্যাগ নিয়ে ট্রেনে উঠেছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা বেশ কিছু দিন ধরে ‘রেকি’ করার পরেই এ দিন ছিনতাই করেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।