এই পুকুর থেকেই উদ্ধার হয় শিশুর মৃতদেহ, ভাঙড়ে। — নিজস্ব চিত্র।
পারিবারিক অশান্তির জেরে বছর চারেকের শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল জেঠু-জেঠিমার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের কাশীপুর থানার রঘুনাথপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার বাড়ির কাছেই একটি পানা পুকুর থেকে রাখি গায়েন নামে ওই শিশুর দেহ উদ্ধার হয়। অভিযুক্ত জগবন্ধু ও বিশাখা গায়েনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাত পর্যন্ত শিশুর দেহ নিয়ে কাশীপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবার পরিজনেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাখির বাবা ভবসিন্ধু ডাব বিক্রেতা। তাঁর দুই ছেলে-মেয়ে। তাঁর মেজদা জগবন্ধুরও দুই সন্তান। ভবসিন্ধুর সঙ্গে দাদা জগবন্ধুর বিবাদ রয়েছে। সম্প্রতি ভবসিন্ধু বাড়িতে মন্দির তৈরি করতে চাইলে জগবন্ধু তাতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে দুই পরিবারে অশান্তি বাধে। তবে বাড়ির বাচ্চাদের মধ্যে বিবাদ ছিল না। তারা এক সঙ্গে খেলাধূলা করত। এ দিনও বাড়ির উঠোনে চার ভাই-বোন খেলা করছিল। হঠাৎই উধাও হয়ে যায় ছোট্ট রাখি।
প্রতিবেশীদের কেউ কেউ জানান, রাখিকে তার জেঠিমার হাত ধরে পুকুর পাড়ের দিকে যেতে দেখা গিয়েছিল। সেই মতো স্থানীয় বাসিন্দারা ওই এঁদো পুকুরে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে সেখান থেকেই রাখির দেহ মেলে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাখির মা কৃষ্ণা বলেন, “ওরা আমাদের মন্দির তৈরিতে বাধা দিয়েছিল। আমরা ওদের কথা না শুনে মন্দির তৈরি করি। সে কারণেই আমার জা ও ভাসুর মেয়েকে গলা টিপে খুন করে পুকুরের পাঁকে পুঁতে দিয়েছিল।” ভবসিন্ধুর কথায়, “দাদার সঙ্গে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য তৈরি হয়। সে কারণেই ওরা আমার মেয়েকে গলা টিপে খুন করেছে।” এ দিন পুলিশ অভিযোগ নিতে চাইছিল না বলেও দাবি করেন তিনি। সে কথা অবশ্য মানেনি পুলিশ। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে তারা।
শিশু-মৃত্যুর ঘটনার পরে স্থানীয় লোকজন জগবন্ধুর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনার পরে পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছিল। পরে ভবসিন্ধু দাদা-বৌদির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।