Road Accident

তেলের ট্যাঙ্কার পিষে দিল মহিলা পুলিশকর্মীকে, হাসপাতালে মৃত্যু

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম ঋতুপর্ণা দে (৩৬)। এএসআই ঋতুপর্ণা ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি চেতলায়। তবে, বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে তিনি টালিগঞ্জের পুলিশ আবাসনে থাকতেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:৫৮
Share:

রিজেন্ট পার্কের এখানেই তেলের ট্যাঙ্কার পিষে দেয় মহিলা এএসআই-কে। মঙ্গলবার তা দেখাচ্ছেন এক পুলিশ আধিকারিক। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার পথে তেলের ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হল এক মহিলা পুলিশকর্মীর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম ঋতুপর্ণা দে (৩৬)। এএসআই ঋতুপর্ণা ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি চেতলায়। তবে, বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে তিনি টালিগঞ্জের পুলিশ আবাসনে থাকতেন। তাঁর বাবা জানান, অসুস্থ মাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য মঙ্গলবার ছুটি নিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানে অফিস যেতে সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ মোটরবাইকে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা।
সন্ধ্যায় কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাড়িতে ঢোকার মুখে দেশপ্রাণ শাসমল রোডের জুবিলি পার্কের মোড়ে দাঁড়িয়েছিলেন ওই পুলিশকর্মী। ট্রামলাইনের উপর দিয়ে চলা বাইকটি ডান দিকে ঘুরে পুলিশ আবাসনে ঢুকতেই সেটির চাকা পিছলে যায়। কিছুটা
দূরে ছিটকে পড়েন ঋতুপর্ণা। সেই সময়ে পিছন থেকে আসা একটি তেলের ট্যাঙ্কার তাঁর পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে ঋতুপর্ণার দুই পা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। সে সময়ে কাছাকাছি ছিলেন রিজেন্ট পার্ক ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি মলয় রায়। তিনি খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আহত ওই পুলিশকর্মীকে প্রথমে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ঋতুপর্ণাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ তেলের ট্যাঙ্কারটি আটক করে চালককে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

চেতলা গার্লস স্কুল লাগোয়া একচিলতে ভাড়া বাড়িতে বেড়ে ওঠা ঋতুপর্ণার। বাবা গোপাল দে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। স্নাতক উত্তীর্ণ ঋতুপর্ণা রাজ্য বাস্কেটবলে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। অ্যাথলিট কোটায় ২০০৭ সালে পুলিশের চাকরি পান।
মঙ্গলবার টালিগঞ্জের পুলিশ আবাসনে গিয়ে দেখা গেল, মেয়ের মৃত্যুর খবর তখনও দেওয়া হয়নি তাঁর অসুস্থ মাকে। কয়েক মাস আগেই তাঁর হার্টের অস্ত্রোপচার হয়েছে। বাবা-মা দু’জনেই বয়সের ভারে
ন্যুব্জ, ভাল ভাবে হাঁটাচলাও করতে পারেন না। নীচের তলায় এক পুলিশকর্মীর ফ্ল্যাটে বসে রয়েছেন ঋতুপর্ণার বাবা। সেখানে তাঁকে সামলাচ্ছেন অন্য পুলিশকর্মী ও তাঁদের স্ত্রীরা। গোপাল বলেন, ‘‘মেয়েকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছিলাম। আমরা
চেতলায় ছোট ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। আমাদের কথা ভেবেই ২০২০ সালে ও আমাদের পুলিশ আবাসনে নিয়ে আসে। আমাদের জন্য সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে অকালে চলে গেল। এর পরে আমাদের কী হবে?’’ বলতে বলতে ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেললেন তিনি। অকালে মেয়েকে হারিয়ে তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা ভেবেই সংশয়ে তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement