প্রভাস এই ঘরেই থাকেন বাচ্চাদের নিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
ভেবেছিলেন আবাস যোজনার টাকা পেলে পাকা ঘর বানাবেন। কিন্তু তালিকায় নাম উঠলে আজও টাকা মেলেনি। ভাঙাচোরা বাড়িতে কোনও রকমে মাথা গুঁজে দিন কাটছে হিঙ্গলগঞ্জের রূপমারি পঞ্চায়েতের মধু সর্দার, গোবিন্দ সর্দারদের।
ত্রিপল ঘেরা ঝুপড়িতে থাকেন গোবিন্দ। দিনমজুরি করেন। মাঝে মধ্যে রাজ্যের বাইরেও কাজে যান। সংসার টানতে স্ত্রী সুন্দরীও দিনমজুরি করেন। চার বাচ্চা নিয়ে ঝুপড়িতে কাটে রাত-দিন। গোবিন্দ জানান, বৃষ্টি হলে জল ঢোকে ভিতরে। রাতের দিকে জোরে বৃষ্টি হলে জেগেই কাটাতে হয়। গরম বাড়লে আবার ত্রিপলের ছাউনির নীচে টেকা যায় না। ঠান্ডায় কষ্ট বাড়ে। সুন্দরী বলেন, “ভেবেছিলাম, এই শীতের আগে ঘর হয়ে যাবে। কিন্তু তা আর হল না। বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে কাটাতে হবে শীতের দিনগুলো।” গোবিন্দের আক্ষেপ, “নিজের রোজগারে মাটির বাড়ি করারও সামর্থ্য নেই। জানি না, কোনও দিন সরকারি ঘর মিলবে কি না!”
দিনমজুরি করে সংসার চলে মধুরও। তা-ও কখনও কাজ জোটে, কখনও জোটে না। স্ত্রী অসুস্থ। সংসার চলছে না দেখে ছেলে কিছু দিন হল তামিলনাড়ু চলে গিয়েছে শ্রমিকের কাজে। বাড়ি বলতে, দরমার বেড়া আর অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া একটা ঘর। পাশেই থাকে গরু। মধু বলেন, “সরকারি ঘরের তালিকায় নাম থাকলেও টাকা পাইনি। আগে খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘর ছিল। সামান্য কয়েক হাজার টাকা জমিয়ে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দিয়েছি কয়েক বছর হল।” স্ত্রী সঙ্গীতা বলেন, “গরু একটাই, তবে গোয়াল তৈরির টাকা নেই। তাই ঘরের একটা অংশে ওকে ঠাঁই দিয়েছি।”
গোবিন্দ, মধুদের মতোই ভাঙাচোরা ঘরে কোনও রকমে দিন কাটছে টিনপাড়ায় আরও অনেক পরিবারের। তাঁরা জানান, ঠান্ডা বাড়লে কষ্ট আর বাড়ে তাঁদের। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। কবে মিলবে টাকা, সেই আশাতে বসে সকলে।
হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও দেবদাস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “পরিবারগুলির জন্য কী করা যায়, তা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করব।”