ক্ষতিগ্রস্ত: সেই অটো (বাঁ দিকে)।
বিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ৫ জনের। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ফলতার ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের সাইপুর মোড়ের কাছে। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বরযাত্রী-বোঝাই একটি অটোয় ধাক্কা মারে বাস। অটোর চালক-সহ ৫ জনের মৃত্যু হয়। জখম হয়েছেন আরও ৭ জন। তাঁদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম আকাশ মণ্ডল (২৪), রোহন মণ্ডল (১৭), প্রিয়ব্রত শিকদার (১৩), সঞ্জীব মণ্ডল (৫৫) ও সুখেন মণ্ডল (৫৮)। প্রথম তিনজনের বাড়ি মনসারহাট গ্রামে। চতুর্থজনের বাড়ি ডায়মন্ড হারবারের আমিড়ায়। চালক সুখেন থাকতেন উস্তির তপনা গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মনসারহাট গ্রামের যুবক সৌমিত্র মণ্ডলের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল এ দিন রাতে। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ দু’টি অটো করে প্রায় ২৫ জন বরযাত্রী ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের দোস্তপুর মোড় থেকে আমতলার দিকে যাচ্ছিলেন। সাইপুর মোড়ের কাছে উল্টো দিক দিয়ে আসা একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোয় ধাক্কা মারে। অভিযোগ, ২১০ রুটের কলকাতা-রায়চক ও এসডি ১১ রুটের নুরপুরগামী দু’টি বাস তীব্র গতিতে রেষারেষি করছিল। রায়চকগামী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। বাসের গতি বেশি থাকায় তার ধাক্কায় অটোটি প্রায় ৪০ ফুট দূরে পাশের নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে।
স্থানীয় কয়েকজন এবং অন্য অটোয় থাকা লোকজন ছুটে আসেন। টহলদারি পুলিশের সাহায্যে সকলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পাঁচজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
শোকার্ত পরিবার। ছবি: দিলীপ নস্কর
শনিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রক্ত। এদিক-ওদিক পড়ে জুতো, মাস্ক, চশমা। অন্য অটোর যাত্রী সুমন মণ্ডল বলেন, “ওই অটোটি আমাদের আগে ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ হতেই দেখি, অটোয় একটা বাস ধাক্কা মেরেছে। আমরা নেমে সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
সৌমিত্রর বিয়ের অনুষ্ঠান অবশ্য শেষ হয়েছে। তাঁর কথায়, “এমন দুর্ঘটনা ঘটবে ভাবতেও পারিনি। মৃত ও জখম সকলেই আমার আত্মীয়-পরিজন।”
এ দিন দুপুরে জেলাশাসকের তরফে মৃতদের পরিবারের হাতে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাসটি আটক করা হয়েছে। চালককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।