বাড়ির পুজো
Durga Puja 2022

ষষ্ঠীতে কামান দাগা হত গোবরডাঙার জমিদার বাড়িতে

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এই পুজো গোবরডাঙার জমিদার বাড়ির পুজো হিসাবে পরিচিত। পরিবারের সদস্য অঞ্জনপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানান, এ বছর তাঁদের পুজো ৩১১ বছরে পড়ল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোবরডাঙা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৮
Share:

সপরিবার: তৈরি হচ্ছে জমিদার বাড়ির প্রতিমা। ছবি: সুজিত দুয়ারি

করোনা পরিস্থিতিতে গত দু’বছর গোবরডাঙার প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের পরিবারে ঘটপুজো করেই দুর্গাপুজো সারা হয়েছে। এ বার অবশ্য পুরনো রীতিনীতি মেনে সাড়ম্বরে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। থিম পুজোর ভিড়েও এলাকার মানুষের কাছে মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজো নিয়ে উৎসাহ এতটুকু কমেনি।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এই পুজো গোবরডাঙার জমিদার বাড়ির পুজো হিসাবে পরিচিত। পরিবারের সদস্য অঞ্জনপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানান, এ বছর তাঁদের পুজো ৩১১ বছরে পড়ল। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ভারত-চিন যুদ্ধ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ২০০০ সালের বন্যাতেও পুজো বন্ধ হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতিতে পর পর দু’বছর মূর্তিপুজো হয়নি। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকশো বছর আগে মুখোপাধ্যায় পরিবারের পূর্বপুরুষেরা উত্তরপ্রদেশ থেকে অধুনা বাংলাদেশের সারষা এলাকার সাগরদাঁড়িতে এসে বসবাস শুরু করেন। ওইখানেই পুজো শুরু করেন তাঁরা। পরিবারের এক সদস্য শ্যামরাম মুখোপাধ্যায় গাইঘাটার ইছাপুরে এসে চৌধুরী জমিদার পরিবারের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। সেই সূত্রে তিনি জমিদারির একাংশ পান। তাঁর ছেলে খেলারাম কালেক্টর ছিলেন। তিনিই গোবরডাঙার বাড়িতে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। পাশাপাশি তিনি এলাকায় প্রসন্নময়ী দক্ষিণাকালী মন্দির ও দ্বাদশ শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কথিত আছে, রানি রাসমণি ওই কালী মন্দিরে এসেছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেল, জন্মাষ্টমীর দিন বাবলা কাঠ দিয়ে কাঠামো পুজো শুরু হয়। প্রতিপদে কালীমন্দিরে ঘট স্থাপন করা হয়। সপ্তমীর দিন ওই ঘট ও কলা বৌ মণ্ডপে আনা হয়। তালপাতার পুঁথিতে লেখা মন্ত্র পাঠ করা হয় পুজোয়। অতীতে মহিষ বলি দেওয়া হত। পরে ১৪টি পাঁঠা, ২টি ভেড়া, আখ-চালকুমড়ো বলি দেওয়া শুরু হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে বলি প্রথা তুলে দেওয়া হয়েছে। অতীতে ষষ্ঠীতে জমিদার বাড়িতে কামানদাগা হত। শোনা যায়, প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় হাতি থাকত। যমুনা নদীতে নৌকোয় করে প্রতিমা ঘুরিয়ে বিসর্জন দেওয়া হত। এখনও পুজোর ক’টা দিন জমিদার বাড়িতে বহু মানুষের সমাগম ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক এখানে পুজো দেখতে আসেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement