—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের দিন গঙ্গাসাগরের তিন জায়গায় মৃত্যু হয়েছে ভিন্ রাজ্যের তিন পুণ্যার্থীর। ভিড়ের মধ্যে পড়ে গিয়ে পায়ের চাপে অসুস্থ হয়ে তাঁরা মারা গিয়েছেন বলে দাবি পরিবারের। প্রশাসনের অব্যবস্থাকে এ জন্য দায়ী করছেন তাঁরা। প্রশাসন অবশ্য ভিড়ের চাপে মৃত্যুর অভিযোগ মানেনি। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়ন্ত সুকুল বলেন, ‘‘যে তিনটি দেহ সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে ময়না তদন্ত হয়েছে, তাঁরা ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিলেন। হাসপাতালে দেহ আনা হয়েছিল। ব্রেন স্টোক বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এঁরা মারা গিয়েছেন।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ বার গঙ্গাসাগর মেলায় এসেছেন এক কোটিরও বেশি পুণ্যার্থী। সোমবার, সংক্রান্তির দিন ভিড় ছিল সব থেকে বেশি। স্থানীয় সূত্রের খবর, স্নান সেরে পুজো দিয়ে ফেরার পথে বহু জায়গায় ভিড় জমে যায়। বাসস্ট্যান্ড ও জেটিঘাটগুলিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল হতে হয় প্রশাসনকে। কুয়াশার জন্য ভেসেল আটকে ঘাটে লোক জমতে থাকে।
উত্তরপ্রদেশের অমেঠি জেলার বাসিন্দা কৃষ্ণপ্রসাদ দ্বিবেদী (৬৩) এসেছিলেন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। পরিবারের দাবি, বিকেলের দিকে সাগরের ৩ নম্বর রাস্তার অস্থায়ী হাসপাতালের কাছে ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান কৃষ্ণপ্রসাদ। পদপিষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে। তাঁর আত্মীয় অজয় মিশ্র বলেন, “আমি ওঁর সঙ্গেই ছিলাম। প্রশাসন দীর্ঘক্ষণ আমাদের আটকে রেখেছিল। একটা ব্যারিকেড থেকে অন্য ব্যারিকেডে যেতে এক সঙ্গে অনেককে ছেড়ে দেওয়া হয়। পিসেমশাই রাস্তায় পড়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যান। ওঁর কোনও অসুখ ছিল না।’’ সন্ধ্যায় কচুবেড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হন বিহারের দারিগাঁওয়ের বাসিন্দা রাজদীপ সোনার (৭৮)। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ছেলে কামেশ্বর বলেন, ‘‘ভিড়ের ধাক্কায় পড়ে যান বাবা। আমরা সঙ্গে সঙ্গে দূরে সরিয়ে আনি। বমি করছিলেন উনি। পরে হাসপাতালে মারা যান।’’ সন্ধ্যায় সমুদ্রে স্নান করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বিহারেরই সীতামঢ়ি এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ ঠাকুরের (৭০)। পরিবারের দাবি, সমুদ্রে নামার সময়ে ভিড়ে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান বিশ্বনাথ। তাঁর আত্মীয় প্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘আর উঠতে পারেননি।’’
ভিড়ের চাপে মৃত্যুর কথা মানতে চাননি জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। মৃতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, মৃত্যুর শংসাপত্রে মারা যাওয়ার কারণ উল্লেখ করা হয়নি। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই সব কাজ হয়েছে।’’