ডেঙ্গিতে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনিক শিথিলতাকে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
রাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনিক শিথিলতাকে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। মঙ্গলবার বিকেলে মালদহের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, রাজ্যে এ বছর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। একই সঙ্গে মেনে নিলেন, পুজোর সময়ে আরও সতর্ক থাকলে এই মৃত্যু অনেকটাই ঠেকানো যেত। এর জন্য সাধারণ মানুষকেও সতর্ক হতে পরামর্শ দেন তিনি। বেসরকারির বদলে ভরসা রেখে যেতে বলেন সরকারি হাসপাতালে।
গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যে ডেঙ্গি ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে বলে প্রশাসনেরই একটা অংশের দাবি। কিন্তু প্রথম থেকেই রাজ্য প্রশাসনের অন্য একটি অংশ মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাইছিল না। এমনকি এ বছরেও কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর পরে ডেথ সার্টিফিকেটে অন্য কারণ দেখানো হয়েছে। সোমবার লেক টাউনে তিন বছরের এক শিশুর মৃত্যুর পরেও কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘মাত্রাতিরিক্ত ফ্লুইড দেওয়া হয়েছিল। তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে।’’ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, সে দিক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের মন্তব্য এই সংক্রান্ত যাবতীয় বিভ্রান্তি দূর করে দেবে।
ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “পুজোর সময় আরও সতর্ক থাকলে ডেঙ্গিতে মৃত্যু অনেকটাই ঠেকানো যেত। এক জনের মৃত্যুও হওয়া উচিত নয়। আমরা সব সময় সাধ্যমতো ডেঙ্গি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। এই জন্য বছরে ন’মাস প্রচারও চালানো হচ্ছে। তবে ডেঙ্গি প্রতি বছর চরিত্র বদল করায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।” সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর বার্তা, “জ্বর হলে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করুন। বিভিন্ন নার্সিংহোমের থেকে সরকারি হাসপাতালে ভাল চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে।” ডেঙ্গির পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে মালদহে মশার উপদ্রব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মশার উপদ্রবে মালদহের মহানন্দা ভবনে বসে এক কাপ চা-ও খেতে পারিনি।” তাই মশা নিধনে জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিককে দুই পুরসভার পুরপ্রধানদের নিয়ে বৈঠক করার নির্দেশ দেন তিনি।