মাঝসমুদ্রে আগুন লেগে পুড়ে গেল রাসায়নিকের কন্টেনার বোঝাই একটি ভেসেল। তবে ভেসেলের ২২ জন কর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাতে তাঁদের নিয়ে হলদিয়া বন্দরে পৌঁছয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। ভেসেলের কোনও এসি মেশিন বিকল হয়ে আগুন লেগেছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে উপকূলরক্ষী বাহিনী।
ভেসেলটি অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণপত্তনম থেকে রাসায়নিকের কন্টেনার নিয়ে কলকাতা বন্দরে আসছিল। উপকূলরক্ষী বাহিনীর আইজি (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) কুলদীপ সিংহ শেওরান জানান, বুধবার রাত বারোটা পাঁচ নাগাদ স্যান্ড হেড থেকে ৫৫ নটিক্যাল মাইল দূরে ‘এমভি এসএসএল কলকাতা’ নামে ওই ভেসেলে আগুন লাগার খবর আসে। রাতেই হলদিয়া ঘাঁটি থেকে রওনা দেয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ ‘আইসিজিএস রাজকিরণ’। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা থেকে উ়ড়ে যায় একটি ডর্নিয়ের বিমানও। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, ঘটনার গুরুত্ব আঁচ করে বিশাখাপত্তনমে নৌসেনার পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর থেকে একটি ‘সি কিং’ হেলিকপ্টার এবং একটি ডর্নিয়ের বিমান পাঠানো হয়। হেলিকপ্টার থেকেই প্রথম ভেসেলটি নজরে আসে।
বর্ষার মরসুমে বঙ্গোপসাগরে জোরে হাওয়া বইতে থাকায় ভেসেলের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ দিন সকাল আটটা নাগাদ উপকূলরক্ষী বাহিনী যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তখন আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কাছাকাছি পৌঁছতে বেগ পেতে হয়। তবে নৌসেনার হেলিকপ্টার আকাশপথ ভেসেলের কাছাকাছি পৌঁছতে পারায় পরিস্থিতি আঁচ করা সম্ভব হয়েছে। উপকূলরক্ষী বাহিনীর এক কর্তার কথায়, ‘‘কেউ লাইফ বোটে সাগরে ভাসছেন কি না তা বুঝতে ডর্নিয়ের বিমান দিয়ে আশপাশের এলাকা চষে ফেলা হয়েছে।’’
উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রের খবর, প্রথমে ১১ জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি ১১ জনের উদ্ধারকাজে যথেষ্ট ভোগান্তি হয়েছে। বাহিনীর আঞ্চলিক মুখপাত্র অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট চিত্রা বিশ্বাস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই সব কর্মীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে উপকূলরক্ষীরা পৌঁছনোর আগেই ভেসেলের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।’’
২২ জন কর্মীর সকলকে নিরাপদ জায়গায় আনা হলেও ভেসেলের আগুন রাত পর্যন্ত পুরোপুরি নেভেনি। ধীরে ধীরে ভেসেলটি ডুবেও যাচ্ছে। উপকূল রক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।