সভাস্থলে নজরদারি। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় রাজনীতি যে দিকেই মোড় নিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অগ্রাধিকারে থাকবে বাংলার উন্নয়ন। আগামিকাল, বৃহস্পতিবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এ বার কার্যত সেই বার্তা দিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী।
রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই রাজনীতি দ্রুত নানা বাঁক নিচ্ছে। বিরোধী দলগুলিকে একজোট করার ব্যাপারে মমতা যে ভাবে এগিয়ে গিয়েছিলেন, নানা কারণে তা শ্লথ হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, তৃণমূলনেত্রী নিজেও বিরোধী রাজনীতির গতিপ্রকৃতিতে কিছুটা ‘আশাহত’।
সূত্রের খবর, এই অবস্থায় প্রধাণত বাংলার উপরেই তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপর কেন্দ্রীভূত করতে চান মমতা। যার অর্থ দিল্লি থেকে বাংলা তাঁর কাছে বেশি গুরুত্ব পাবে। অনেকের মতে, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক যেমন কেন্দ্রে রাজনীতি করার চাইতে নিজের রাজ্যকে বেশি প্রাধান্য দেন, মমতা হয়তো অনেকটা তেমন পথেইহাঁটতে চাইছেন।
পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার ৪২টি আসন। শেষ বিধানসভা ভোটের হিসেবে সেখানে যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক জায়গায় রয়েছে তৃণমূল। পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল এই ৪২ আসনে দলের অবস্থা যথাসম্ভব দৃঢ় রাখার চেষ্টা করবে। কারণ নিজের রাজ্যে নিজের অবস্থান ঠিক রাখা যায় তা হলে যে কোনও পরিস্থিতিতে দিল্লিতে তাঁর গুরুত্ব থাকবেই। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করাও সহজ হবে।
করোনার কারণে শহিদ তর্পণের এই প্রকাশ্য কর্মসূচি দু’বছর বন্ধ রেখেছিল তৃণমূল। এ বারের প্রকাশ্য জনসভা দলের কাছে সে দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দলের অনেকে মনে করছেন, তৃণমূলের সামনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ আগামী লোকসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী দু’বছরের পথনির্দেশ করে দেবেন তৃণমূলনেত্রী। মঙ্গলবার সেই প্রত্যাশা জানিয়েই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমাদের ২০২৪ সালের লড়াইয়ের প্রস্তুতি কী ভাবে হবে, কী ভাবে আমরা এগোব, নেত্রী সেই পথ বলে দেবেন। দল সেই অপেক্ষায় রয়েছে।’’
একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচিতে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে দলের যুব সংগঠনের। সে দিক থেকে একাধিকবার এই মঞ্চ থেকে দলের নেতা-কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এই মঞ্চ থেকে তিনি কী বলেন, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে।
এ বারের একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচির প্রস্তুতি পর্বে বিশেষ সক্রিয় ছিলেন অভিষেক। একাধিক সভা করেছেন। সেই সভাগুলিতেও সংগঠন পরিচালনার ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, আগামী বছর রাজ্যে যে পঞ্চায়েত ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, সে সম্পর্কেও দলের অবস্থান সেই সব সভায় স্পষ্ট করেছেন তিনি।
এ দিনও দলের দুই শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাপস রায়ের সঙ্গে ধর্মতলার সভামঞ্চ ঘুরে দেখেন অভিষেক। সেই সঙ্গেই তিনি গিয়েছিলেন কলকাতায় যে সব জায়গায় জেলার কর্মী-সমর্থকদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে সেগুলি দেখতে।