—প্রতীকী ছবি।
ভোটের মুখে তৃণমূলে যোগ দিলেন ভাঙড়ের দুই আইএসএফ প্রার্থী। গত ১৫ জুন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ভাঙড় ২ ব্লকের বিজয়গঞ্জ বাজারের মেলার মাঠ এলাকায় আইএসএফ-তৃণমূলের বোমা-গুলির লড়াইয়ে প্রাণ যায় দু’পক্ষের তিন জনের। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন আইএসএফ কর্মী বাহাউদ্দিন মোল্লা। তাঁর ভাই মাসাদুল মোল্লা এ বার ভোটে লড়ছেন চালতাবেড়ি পঞ্চায়েতের ১৫৩ নম্বর বুথ থেকে। বুধবার তিনি শ’তিনেক লোকজন নিয়ে যোগ দিলেন তৃণমূলে।
এ দিন চালতাবেড়িয়ায় পথসভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। মাসাদুল-সহ বাকিদের হাতে সেখানেই দলীয় পতাকা তুলে দেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ে দলের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা, তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামেরা। জখম বাহাউদ্দিনকে দেখতে তাঁর বাড়িতেও যান সওকাতেরা। তৃণমূল নেতাদের উদ্যোগে বাহাউদ্দিনকে এ দিনই কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
সওকাত বলেন, ‘‘আমরা সৌজন্যের রাজনীতি করি। সে দিন গন্ডগোলে বাহাউদ্দিন জখম হয়েছিলেন। ওঁদের দলের কেউ খোঁজ নেননি। আমরা চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা করেছি। ওঁরা আমাদের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।’’ মাসাদুল বলেন, ‘‘আমার ভাই গুলিতে জখম হয়েছিল। দলের কেউ খোঁজ নেননি। তাই ওই দল আমাদের ভাল লাগছে না। স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর পাল্টা দাবি, ‘‘আমি নিজে বাহাউদ্দিনকে দেখতে গিয়েছিলাম। এখন তৃণমূল ভয় দেখিয়ে এ সব করছে।’’
মঙ্গলবার রাতে পোলেরহাট ১ পঞ্চায়েতের ৮৩ নম্বর বুথের প্রার্থী মধুমিতা ঘোষও আইএসএফ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। নওয়াবাদ এলাকায় তৃণমূলের পথসভায় সওকাত মোল্লা, আরাবুল ইসলামের উপস্থিতিতে মধুমিতা ও তাঁর স্বামী নীলরতন ঘোষ দলবদল করেন। মধুমিতা বলেন, ‘‘আমি এক সময়ে তৃণমূল করতাম। বিভিন্ন কারণে অভিমানে দল ছেড়ে আইএসএফে যোগ দিয়েছিলাম। নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার পুরনো দলে ফিরেছি। আইএসএফে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারব না।’’ আইএসএফ নেতা রাইনুর হকের দাবি, ‘‘মধুমিতাকে ভয় দেখিয়ে, চাপ সৃষ্টি করে দলে যোগদান করিয়েছে তৃণমূল।’’
তাঁরা কি ভোটের লড়াইয়ে এখনও থাকছেন, এই প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন এবং মধুমিতা কিছু বলতে চাননি। তবে, আরাবুল ইসলামের দাবি, ‘‘এঁরা কেউ আর ভোটে লড়বেন না। আমাদের সমর্থন জানিয়ে তাঁরা নির্বাচন থেকে সরে এসেছেন। নির্বাচনে আমাদের হয়ে কাজ করবেন।’’ রাইনুর হকের পাল্টা দাবি, ‘‘ওঁদের নামে ব্যালট তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমাদের কর্মীরা প্রচার শুরু করে দিয়েছে। ওঁদের নামেই ভোট হবে। গণনার পরে পুরো বিষয়টা দেখা যাবে।’’