মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের এক মাসের মধ্যে রাজ্যে ১৩০টি ভেজাল জলের ব্র্যান্ডকে নিষিদ্ধ করল ক্রেতা সুরক্ষা দফতর।
বোতলবন্দি পানীয় জল তৈরির অবৈধ ‘ব্যবসা’ নিয়ে অভিযোগ আসছিল অনেক দিন ধরেই। গত ৩০ মে ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে ভেজাল জল তৈরির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই ক্রেতা সুরক্ষা দফতর অভিযান শুরু করে। ওই দফতরের অধীন লিগাল মেট্রোলজি বিভাগ জানতে পারে, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, বীরভূম, জলপাইগুড়িতে প্রায় কুটিরশিল্পের পর্যায়ে রমরমিয়ে চলছে জল তৈরির কারখানা। সেই সব ব্র্যান্ডকে নিষিদ্ধ করে তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। পানীয় জল তৈরির আইন না মেনে ব্যবসা করার অভিযোগে জরিমানাও করা হয়েছে। এর পরেও ‘নিষিদ্ধ’ ব্র্যান্ডের জল বিক্রি হলে তা বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অব ইন্ডিয়ার লাইসেন্স নিয়ে বোতলবন্দি জলের ব্যবসা করতে হয়। লিগাল মেট্রোলজির ছাড়পত্রও জরুরি। বিশুদ্ধতার জন্য বিএসআই মার্ক থাকা বাধ্যতামূলক। এ সব নিয়ম না মেনেই জল তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘অধিকাংশ সংস্থার বৈধ রেজিস্ট্রেশনই নেই। আইএসআই বা বিএসআই মার্ক নেই। কবে জল তৈরি হচ্ছে, কত দিন জলটা পানযোগ্য, তা-ও উল্লেখ থাকে না এই সংস্থাগুলির বোতলে।’’
বিভিন্ন অনুষ্ঠানবাড়িতে মিনারেল ওয়াটারের নামে যে জল দেওয়া হচ্ছে, তার বেশির ভাগই ভেজাল বলে জেনেছেন আধিকারিকেরা। ফলে পানীয় জল কেনার সময়ে বোতলের গায়ে লাগানো লেবেলে জল কবে তৈরি হয়েছে, কত দিন ভাল থাকছে, বিএসআই মার্ক আছে কি না, তা দেখে কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন সাধনবাবু।
এক কর্তার কথায়, ‘‘খুব সাধারণ ফিল্টার ব্যবহার করে, গুণমান বিচার না করেই অধিকাংশ জায়গায় বোতলবন্দি করা হচ্ছে জল।’’ দূরপাল্লার সঙ্গে লোকাল ট্রেনেও স্থানীয় সংস্থার জল বিক্রি হচ্ছে। এর বেশির ভাগই নিয়ম না মেনে তৈরি বলে অভিযোগ। সাধনবাবুর দফতর তাই রেলের নিজস্ব ‘রেলনীর’ই যাত্রীদের মধ্যে বিলি করতে রেল-কর্তাদের নোটিস দিয়েছে। বোতলের গায়ে লেখা দামের (এমআরপি) থেকে বেশি দাম যাতে স্টেশন, বিমানবন্দর, অভিজাত ক্লাব বা বিলাসবহুল হোটেলগুলিতে নেওয়া না হয়, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতেও নোটিস দিয়েছে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর।