বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন তৃণমূলেরই কাউন্সিলররা।
দল বেঁধে কাউন্সিলররা বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় উত্তর ২৪ পরগনার ৪ পুরসভা ইতিমধ্যেই কার্যত হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। এ বার শাসক দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল এই জেলারই বনগাঁ পুরসভায়। নিজেদের দলেরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন ১১ কাউন্সিলর। বনগাঁ পুরসভায় মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ২২। ফলে ক্ষমতা রদবদলের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে প্রবল ভাবে। স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল।
বনগাঁ পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। তাঁর বিরুদ্ধেই শুক্রবার মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়ে অনাস্থাপত্র জমা দিয়েছেন ওই কাউন্সিলররা। আবেদনে ১১ কাউন্সিলরের বক্তব্য, পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য দুর্নীতি ও নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য মহকুমাশাসককে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
২২ ওয়ার্ডের বনগাঁ পুরসভায় তৃণমূলের দখলে ছিল ২০টি আসন। নির্দল এবং সিপিএমের এক জন করে কাউন্সিলর ছিলেন। পরে অবশ্য নির্দল হিসেবে জিতে আসা কাউন্সিলর মনোতোষ নাথ তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে বিরোধী শিবিরে ছিলেন একমাত্র বাম কাউন্সিলর। তবে শাসক দলেরই দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে এ বার পুরপ্রধানের চেয়ারে রদবদল হতে পারে। যদিও বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘দলীয় কাউন্সিলরের একাংশ চেয়ারম্যানের উপরে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। দলের ঊর্ধতন নেতৃত্ব তাঁদের সঙ্গে বসে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করছেন।’’
অনাস্থা প্রস্তাব আনতে মহকুমা শাসককে জমা দেওয়া কাউন্সিলরদের সেই চিঠি।
তাহলে নতুন দাবিদার কে? ১১ ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলররা ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছেন, মনোতোষ নাথকেই তাঁরা পুরপ্রধান করতে চান। সেই লক্ষ্যেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু সেটা যদি না হয়, তখন কী হবে? ইঙ্গিতটা মোটেই সুখকর নয় শাসক দলের কাছে।কেন? কাউন্সিলরদের দলবদলের জেরে ইতিমধ্যেই ভাটপাড়া, নৈহাটি, হালিশহর ও কাঁচরাপাড়া পুরসভা কার্যত শাসক দলের থেকে বিজেপির হাতে চলে গিয়েছে। এই অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ার পরই বনগাঁর ওই কাউন্সিলরদেরও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়েছে।যদিও ‘বিদ্রোহী’রা প্রকাশ্যে বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, মনোতোষ নাথকে চেয়ারম্যান না করা হলে তাঁরা ‘অন্য’ ভাবনাচিন্তা করবেন।
আরও পড়ুন: গজলডোবায় জমি বিক্ষোভে মন্ত্রী গৌতম দেবকে গো ব্যাক ধ্বনি, কালো পতাকা
আরও পড়ুন: কলকাতায় মাদকচক্রে ফের কলেজ যোগ, গভীর রাতে ৫ পড়ুয়া ধৃত, জালে ৩ বিক্রেতা
দলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই কাউন্সিলরদের ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা এবং অন্য জনকে চেয়ারম্যান করার দাবি ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও প্রকাশ্যে সে কথা কেউই স্বীকার করছেন না। দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য এড়িয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের দুশ্চিন্তায় রেখেছে বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের ওই ‘অন্য’ ভাবনার তত্ত্ব।
বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।