আইবুড়ো ভাত
আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠান বেশ জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে উঠছে ক্রমশ। প্রথমেই আসা যাক যে বিষয়ে, তা হল- আইবুড়ো ভাত আসলে কী। অতীতে আইবুড়ো বলতে শুধুমাত্র অবিবাহিত মেয়েদের বোঝানো হত। বর্তমানে অবিবাহিত ছেলে ও মেয়ে দু’জনের ক্ষেত্রেই তা ব্যবহার হয়। এবং বিয়ের আগে অবিবাহিত জীবনের শেষ খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানটি দুই পক্ষেই হয়ে থাকে। তাকেই বলে আইবুড়ো ভাত।
বিয়ের আগে কিছু দিন ধরেই আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু বান্ধবরা আইবুড়ো ভাতের আয়োজন করেন বাড়িতে অথবা রেস্তরাঁয়। বিয়ের আগের দিন বাড়িতে শেষ আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান হয়। ভাজা, ডাল-সহ বিভিন্ন তরকারি, রকমারি মাছের পদ, মাংস ইত্যাদি থাকে মেনুতে। ইদানীং বর-কনের একসঙ্গে আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠানও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে অবশ্যই তা শেষ আইবুড়ো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নয়।
সাধারণত বর বা কনের মা বিয়ের আগে শেষ বারের মতো পরিপাটি করে আইবুড়ো জীবনের রান্না খাওয়ান আদরের সন্তানকে। অনুষ্ঠানের পরতে পরতে তাই জড়িয়ে থাকে অপত্য স্নেহ ও ভালবাসার ছোঁয়া। কারণ মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলে আপেক্ষিক ভাবে সে অন্য পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠে। তাই যে বাড়িতে তার বেড়ে ওঠা, বিয়ের আগে সেখানে তার আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ খাওয়া এই আইবুড়ো ভাত। ফলে কনের পছন্দসই পাঁচ রকমের ভাজা, সোনা মুগ ডাল, বাসমতি চালের ভাত, শুক্তো, আলু পোস্ত, সর্ষে ইলিশ, চিংড়ি মাছের মালাইকারি, চিকেন, মাটন ইত্যাদি সাজিয়ে পরিবেশন করা হয় তাঁকে। আর বন্ধুমহল সাধারণত রেস্তরাঁয় সবাই মিলে হইহই করে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। রেস্তরাঁয় পদ নির্বাচন করে অথবা সাধারণ থালি নেওয়া হয়। আবার কিছু কিছু রেস্তোরাঁয় আইবুড়ো থালিও পাওয়া যায়।
সেই এলাহি আয়োজনেই এ বার আসুক খানিক নতুনত্বের ছোঁয়া। আইবুড়ো ভাতের মেনুতে যোগ করতে পারেন এঁচোড় পনির দম, ধোকার ডালনা, পাবদা মাছের সর্ষে ঝাল, চিংড়ি পোস্ত। এই পদগুলি নতুনত্ব নিয়ে আসবে আইবুড়ো ভাতের থালায়।
এই প্রতিবেদনটি ‘সাত পাকে বাঁধা’ ফিচারের অংশ।